Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

আইন ও বিধি
 
 
 
 
স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) অধ্যাদেশ, ২০০৮
 
( ২০০৮ সনের ৩২ নং অধ্যাদেশ)
 [৩০ জুন, ২০০৮]
   
     উপজেলা পরিষদ সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন রহিত করিয়া একটি নূতন অধ্যাদেশ প্রণয়নকল্পে প্রণীত
 
 
অধ্যাদেশ

যেহেতু উপজেলা পরিষদ সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন রহিত করিয়া একটি নূতন অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; এবং


যেহেতু সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া অবস্থায় রহিয়াছে এবং রাষ্ট্রপতির নিকট ইহা সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইয়াছে যে, আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে;


সেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি নিম্নরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করিলেনঃ-

  
  প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
  
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন ও প্রয়োগ 
১। (১) এই অধ্যাদেশ স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) অধ্যাদেশ, ২০০৮ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) অধ্যাদেশ, ২০০৮ (২০০৮ সনের ১৬ নং অধ্যাদেশ) ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড আইন, ১৯২৪ (১৯২৪ সনের ২ নং আইন) এর আওতায় গঠিত এলাকা ব্যতীত সমগ্র বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য হইবে।

(৩) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
  
 
  
   
  
সংজ্ঞা 
২। বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কিছু না থাকিলে, এই অধ্যাদেশে,-

(১) 'আচরণ বিধি' অর্থ এই অধ্যাদেশের অধীন প্রণীত আচরণ বিধি;

(২) 'আর্থিক প্রতিষ্ঠান' অর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭ নং আইন) এর ধারা ২ এবং অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ (২০০৩ সনের ৮ নং আইন) এর ধারা ২ এ সংজ্ঞায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান;

(৩) 'ইমারত' অর্থে কোন দোকান, বাড়িঘর, কুঁড়েঘর, বৈঠকঘর, চালা, আস্তাবল বা যেকোন প্রয়োজনে যেকোন দ্রব্যাদি সহযোগে নির্মিত কোন ঘেরা, দেয়াল, পানি-সংরক্ষণাগার, বারান্দা, প্লাটফরম, মেঝে ও সিঁড়িও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৪) 'ইউনিয়ন' এবং 'ইউনিয়ন পরিষদ' অর্থ The Local Government (Union Parishads) Ordinance, 1983 (LI of 1983) এর section 2 এর যথাক্রমে clauses (26) এবং (27) এ সংজ্ঞায়িত “Union” এবং “Union Parishad”;

(৫) 'উপজেলা' অর্থ এই অধ্যাদেশের ধারা ৬ এর অধীন উপজেলা হিসাবে ঘোষিত এলাকা এবং বিদ্যমান উপজেলাসমূহ;

(৬) 'উপজেলা পরিষদ বা পরিষদ' অর্থ এই অধ্যাদেশের অধীন গঠিত উপজেলা পরিষদ;

(৭) 'কর' অর্থ কোন কর, উপ-কর, টোল, রেইট, ফি, শুল্ক অথবা এই অধ্যাদেশের অধীন আরোপযোগ্য কোন করও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৮) 'কমিশন' অর্থ স্থানীয় সরকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০০৮ (২০০৮ সনের ১৫ নং অধ্যাদেশ) এর অধীন গঠিত স্থানীয় সরকার কমিশন;

(৯) 'চেয়ারম্যান' অর্থ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান;

(১০) 'ভাইস চেয়ারম্যান' অর্থ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান;

(১১) 'অস্থায়ী চেয়ারম্যান' অর্থ চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি;

(১২) 'মহিলা সদস্য' অর্থ পরিষদের সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত মহিলা সদস্য;

(১৩) 'তফসিল' অর্থ এই অধ্যাদেশের কোন তফসিল;

(১৪) 'তহবিল' অর্থ ধারা ৪১ এর অধীন গঠিত উপজেলা পরিষদের তহবিল;

(১৫) 'নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ' অর্থ সরকার বা এই অধ্যাদেশের কোন সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার কর্তৃক ক্ষমতা প্রদত্ত যেকোন সরকারি কর্মকর্তা;

(১৬) 'নির্বাচন কমিশন' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত নির্বাচন কমিশন;

(১৭) 'নির্বাচন পর্যবেক্ষক' অর্থ কোন ব্যক্তি বা সংস্থা যাহাকে নির্বাচন কমিশন বা এতদুদ্দেশ্যে তৎকর্তৃক অনুমোদিত কোন ব্যক্তি কর্তৃক এই অধ্যাদেশের অধীন কোন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য লিখিতভাবে অনুমতি দেওয়া হইয়াছে;

(১৮) "নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ" অর্থ দণ্ডবিধিতে সংজ্ঞায়িত চাঁদাবাজি, চুরি,সম্পত্তি আত্নসাৎ, বিশ্বাস ভংগ, ধর্ষণ, হত্যা, খুন এবং Prevention of Corruption Act, 1947 (Act. II of 1947) এ সংজ্ঞায়িত "Criminal misconduct"ও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১৯) 'প্রবিধান' অর্থ এই অধ্যাদেশের অধীন প্রণীত প্রবিধান;

(২০) 'পৌর প্রতিনিধি' অর্থ স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) অধ্যাদেশ, ২০০৮ (২০০৮ সনের ১৭ নং অধ্যাদেশ) এর অধীন গঠিত পৌরসভার মেয়র বা তাহার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি;

(২১) 'বাজার' অর্থ এমন কোন স্থান যেখানে জনগণ মাছ, মাংস, ফল-মূল, শাক-সব্জী বা অন্য যে কোন খাদ্য দ্রব্য বিক্রয় ও ক্রয়ের জন্য জড়ো হয় অথবা পশু বা গরু-ছাগল ও পশুপক্ষী ক্রয়-বিক্রয় হয় এবং এমন কোন স্থান যাহা বাজার হিসেবে বিধি অনুযায়ী ঘোষণা করা হইয়াছে;

(২২) 'বাজেট' অর্থ উপজেলা পরিষদের একটি আর্থিক বৎসরের আয় ও ব্যয়ের নির্ধারিত আর্থিক বিবরণ;

(২৩) 'বিধি' অর্থ এই অধ্যাদেশের অধীন প্রণীত বিধি;

(২৪) 'ব্যাংক' অর্থ -

(ক) ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ১৪ নং আইন) এর ধারা ৫(ণ) এ সংজ্ঞায়িত ব্যাংক কোম্পানী;

(খ) The Bangladesh Shilpa Rin Sangstha Order, 1972 (P.O No. 128 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা;

(গ) The Bangladesh Shilpa Bank Order, 1972 (P.O No. 129 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক;

(ঘ) The Bangladesh House Building Finance Corporation Order, 1973 (P.O No. 7 of 1973) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন;

(ঙ) The Bangaladesh Krishi Bank Order, 1973 (P.O. No. 27 of 1973) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক;

(চ) The Investment Corporation of Bangladesh Ordinance, 1976 (Ordinance No. XL of 1976) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ;

(ছ) The Rajshahi Krishi Unnayan Bank Ordinance, 1986 (Ordinance No. LVIII of 1986) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক; বা

(জ) কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Basic Bank Limited (Bangladesh Small Industries and Commerce Bank Limited);

[ (২৬) ''লাভজনক পদ (Office of Profit) '' অর্থ প্রজাতন্ত্র কিংবা সরকারি সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ বা সরকারি মালিকানাধীন শতকরা পঞ্চাশ ভাগ বা তদূর্ধ্ব শেয়ারভুক্ত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীতে সার্বক্ষণিক বেতনভুক্ত পদ বা অবস্থান;]

(২৭) 'সংক্রামক ব্যাধি' অর্থে এমন ব্যাধি যাহা একজন ব্যক্তি হইতে অন্য ব্যক্তিকে সংক্রামিত করে এবং সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রকাশিত অন্য যে কোন ব্যাধিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(২৮) 'সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫২(১) অনুচ্ছেদে সংজ্ঞায়িত কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ;

(২৯) 'সদস্য' অর্থ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানসহ অন্য যে কোন সদস্য;

(৩০) 'সরকার' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার;

(৩১) 'সরকারি রাস্তা' অর্থ সরকার কিংবা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান অথবা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণাধীন জনসাধারণের চলাচলের জন্য সকল রাস্তা;

(৩২) 'স্থানীয় কর্তৃপক্ষ' অর্থ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা কোন আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোন বিধিবদ্ধ সংস্থা;

(৩৩) 'স্থায়ী কমিটি' অর্থ এই অধ্যাদেশের অধীন গঠিত উপজেলা পরিষদের স্থায়ী কমিটি;

(৩৪) 'স্থানীয় পরিষদ' অর্থ আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ; এবং

(৩৫) 'হাট' অর্থ পণ্যসামগ্রী, খাদ্য, মালামাল, পশুসম্পদ, ইত্যাদি সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন ও সময়ে ক্রয়বিক্রয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান।
  
 
  
  দ্বিতীয় অধ্যায়
পরিষদ
  
প্রশাসনিক এককাংশ বা ইউনিট এবং উপজেলা ঘোষণা, ইত্যাদি 
৩। (১) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৯ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রতিটি উপজেলা একটি প্রশাসনিক এককাংশ বা ইউনিট হিসাবে গণ্য হইবে।

(২) এই অধ্যাদেশ বলবৎ হইবার পর সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট এলাকা সমন্বয়ে নূতন উপজেলা ঘোষণা করিতে পারিবে।

(৩) সরকার কোন উপজেলা পরিষদের অনুরোধে অথবা সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদের সহিত পরামর্শক্রমে গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে-

(ক) নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করিয়া উপজেলা পরিষদের কার্যালয় পরিবর্তন করিতে পারিবে; এবং

(খ) উপজেলা পরিষদকে অধিকতর প্রতিনিধিত্বশীল করিবার লক্ষ্যে সীমানা হ্রাস বা বৃদ্ধি করিতে পারিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, উপজেলা পরিষদের নামকরণ ব্যক্তির নামে হইবে না।

(৪) সরকার সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদের সহিত পরামর্শ করিয়া, যদি কোন উপজেলা পরিষদের এখতিয়ার কোন এলাকার উপর না থাকে, তাহা হইলে এই সংক্রান্ত দায়-দেনা হইতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদকে মুক্ত করিবার অধিকার রাখিবে।
  
 
  
   
  
উপজেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা, ইত্যাদি 
৪। (১) এই অধ্যাদেশ বলবৎ হইবার পর, সরকার, যতশীঘ্র সম্ভব, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপণ দ্বারা, প্রত্যেক উপজেলায় এই অধ্যাদেশের বিধান অনুযায়ী একটি উপজেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করিবে।

(২) পরিষদ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই অধ্যাদেশ ও তদধীন প্রণীত বিধি, প্রবিধি, ইত্যাদি সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহার নামে ইহা মামলা দায়ের করিতে পারিবে অথবা ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

(৩) পরিষদ এই অধ্যাদেশসহ অন্য কোন আইনের দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতা, কার্যাবলী এবং দায়িত্ব পালন করিবে।
  
 
  
   
  
পরিষদ গঠন 
৫। (১) এই অধ্যাদেশের বিধান অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণ সমন্বয়ে উপজেলা পরিষদ গঠিত হইবে, যথাঃ-

(ক) চেয়ারম্যান;

(খ) দুই জন ভাইস চেয়ারম্যান, যাহার মধ্যে একজন মহিলা হইবেন;

(গ) উপজেলার এলাকাভুক্ত প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সাময়িকভাবে চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি;

(ঘ) উপজেলার এলাকাভুক্ত প্রত্যেক পৌরসভা, যদি থাকে, এর মেয়র অথবা [ পৌরসভা কর্তৃক মনোনীত একজন কাউন্সিলর] এবং

(ঙ) উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যগণ।

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানগণ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রণীত ভোটার তালিকায় অনর্ভুক্ত ভোটারদের দ্বারা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিধারিত সময়, স্থান ও পদ্ধতিতে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সরাসরি নির্বাচিত হইবেন।

(৩) কোন উপজেলার এলাকাভুক্ত কোন ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা বাতিল হইবার কারণে উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) ও (ঘ) এর অধীন উপজেলা পরিষদের সদস্য থাকিবেন না এবং এইরূপ সদস্য না থাকিলে উক্ত উপজেলা পরিষদ গঠনের বৈধতা ক্ষুণ্ন হইবে না।

(৪) প্রত্যেক উপজেলার এলাকাভুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ এবং পৌরসভা, যদি থাকে, এর মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের সম সংখ্যক আসন, অতঃপর সংরক্ষিত আসন বলিয়া উল্লিখিত, মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে, যাহারা উক্ত উপজেলার এলাকাভুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা, যদি থাকে, এর সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য বা কাউন্সিলরগণ কর্তৃক তাহাদের মধ্য হইতে নির্বাচিত হইবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, এই ধারায় কোন কিছুই কোন মহিলাকে সংরক্ষিত আসন বহির্ভুত আসনে সরাসরি নির্বাচন করিবার অধিকারকে বারিত করিবে না।

ব্যাখ্যাঃ- এই উপ-ধারার অধীন সংরক্ষিত আসনে সংখ্যা নির্ধারণের ক্ষেত্রে, যদি উক্ত সংখ্যার ভগ্নাংশ থাকে এবং উক্ত ভগ্নাংশ অর্ধেক বা তদুর্ধ্ব হয়, তবে উহাকে পূর্ণ সংখ্যা বলিয়া গণ্য করিতে হইবে এবং যদি উক্ত ভগ্নাংশ অর্ধেকের কম হয়, তবে উহাকে উপেক্ষা করিতে হইবে।

(৫) উপ-ধারা (১) এর অধীন উপজেলা পরিষদ গঠিত হইবার পর উহার অধিক্ষেত্রের মধ্যে নূতন পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হইবার কারণে উপজেলা পরিষদের পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠান না হওয়া পর্যন্ত উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত আসন সংখ্যার কোন পরিবর্তন ঘটিবে না এবং এ কারণে বিদ্যমান উপজেলা পরিষদ গঠনের বৈধতা ক্ষুন্ন হইবে না।

(৬) উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) ও (ঘ) তে উল্লিখিত ব্যক্তি এই অধ্যাদেশের অধীন পরিষদের সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।

(৭) কোন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এর পদসহ শতকরা ৭৫ ভাগ সদস্যের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইলে এবং নির্বাচিত সদস্যগণের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইলে, পরিষদ, এই অধ্যাদেশের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইবে।

ব্যাখ্যাঃ গঠিত পরিষদের মোট সদস্যের (৭৫%) পঁচাত্তর শতাংশ নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভগ্নাংশের উদ্ভব হইলে এবং তাহা দশমিক পাঁচ শূণ্য শতাংশের কম হইলে অগ্রাহ্য করিতে হইবে এবং দশমিক পাঁচ শূণ্য শতাংশ বা তার বেশি হইলে তাহা এক গণ্য করিতে হইবে।
  
 
  
   
  
উপজেলা গঠন 
৬। (১) এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কতকগুলি ইউনিয়ন, ক্ষেত্রমত, পৌরসভার সমন্বয়ে একটি উপজেলা ঘোষণা করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে উপজেলার নাম এবং উক্ত উপজেলার সীমানা নির্দিষ্ট করিতে হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) অনুসারে ঘোষিত কোন উপজেলার উপজেলা পরিষদ ইহার এলাকাভুক্ত এবং বাতিলকৃত কোন ইউনিয়ন বা পৌরসভার প্রতিনিধিত্ব না থাকিবার কারণে উক্ত উপজেলা পরিষদ গঠনের বৈধতা ক্ষুণ্ন হইবে না।
  
 
  
   
  
সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা নিয়োগ 
৭। উপজেলাসমূহের সীমানা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা ও সহকারী সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা নিয়োগ করিতে পারিবেন।
  
 
  
  তৃতীয় অধ্যায়
চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচন
  
ভোটার তালিকা ও ভোটাধিকার 
৮। (১) প্রতিটি উপজেলার জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রণীত একটি ভোটার তালিকা থাকিবে।

(২) কোন ব্যক্তি কোন ওয়ার্ডের ভোটার তালিকাভুক্ত হইবার অধিকারী হইবেন, যদি তিনি-

(ক) বাংলাদেশের নাগরিক হন;

(খ) আঠারো বৎসরের কম বয়স্ক না হন;

(গ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত না হন; এবং

(ঘ) সংশ্লিষ্ট উপজেলার বাসিন্দা বলিয়া গণ্য হন।

(৩) কোন ব্যক্তির নাম নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রণীত যে উপজেলার ভোটার তালিকায় লিপিবদ্ধ থাকিবে, তিনি সেই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বা ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচনে ভোট প্রদান করিতে পারিবেন।
  
 
  
   
  
নির্বাচন পরিচালনা 
৯। (১) নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রণীত বিধি অনুসারে নির্বাচন কমিশন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নির্বাচনের আয়োজন, পরিচালনা ও সম্পাদন করিবে এবং অনুরূপ বিধিতে নির্বাচন কমিশন নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোন বিষয়ে বিধান করিতে পারিবে, যথাঃ-

(ক) নির্বাচন পরিচালনার উদ্দেশ্যে রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ এবং তাহাদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব;

(খ) প্রার্থী মনোনয়ন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে হলফনামা, মনোনয়নের ক্ষেত্রে আপত্তি এবং মনোনয়নপত্র বাছাই;

(গ) প্রার্থী কর্তৃক প্রদেয় জামানত এবং উক্ত জামানত ফেরত প্রদান বা বাজেয়াপ্তকরণ;

(ঘ) প্রার্থী পদ প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ;

(ঙ) প্রার্থীর এজেন্ট নিয়োগ;

(চ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে নির্বাচন পদ্ধতি;

(ছ) ভোট গ্রহণের তারিখ, সময় ও স্থান এবং নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়;

(জ) ভোট প্রদান পদ্ধতি;

(ঝ) ভোট বাছাই ও গণনা, ফলাফল ঘোষণা এবং সমসংখ্যক ভোটের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় পদ্ধতি;

(ঞ) ব্যালট পেপার এবং নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য কাগজপত্রের হেফাজত ও বিলি বণ্টন;

(ট) যে অবস্থায় ভোট গ্রহণ স্থগিত করা যায় এবং পুনরায় ভোট গ্রহণ করা যায়;

(ঠ) প্রার্থীদের নির্বাচন ব্যয় এবং এতদ্সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়;

(ড) ভোট গ্রহণের দিন নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনরত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যের গ্রেফতার করিবার ক্ষমতা;

[ (ঢ) নির্বাচনের দুর্নীতিমূলক বা অবৈধ কার্যকলাপ এবং অন্যান্য নির্বাচনী অপরাধ ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের আচরণ বিধি ভঙ্গের দণ্ড];

(ণ) নির্বাচনী বিরোধ এবং উহার বিচার ও নিষ্পত্তি;

(ত) অপরাধ বিচারার্থে আমলে গ্রহণ, নির্বাচন কমিশনের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কতিপয় ব্যক্তির ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ, কতিপয় মামলার মেয়াদ সংক্রান্ত বিষয়াদি;

(থ) নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বদলী, কতিপয় ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভোট গ্রহণ বন্ধ রাখিবার ক্ষমতা এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা;

(দ) ভোট গ্রহণের দিন নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনরত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গ্রেপ্তার করিবার ক্ষমতা;

(ধ) নির্বাচন কমিশন ও কতিপয় কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বৈধতা, নির্বাচন কমিশন এবং কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা বা কার্যক্রম গ্রহণে বাধা; এবং

(ন) নির্বাচন সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়।

(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর ক্ষেত্রে বিধিতে বিধৃত পদ্ধতি অনুযায়ী হলফনামা দাখিল করিতে ব্যর্থ হইলে বা দাখিলকৃত হলফনামায় অসত্য তথ্য প্রদান করিলে বা হলফনামায় উল্লিখিত কোন তথ্যের সমর্থনে সার্টিফিকেট, দলিল, ইত্যাদি দাখিল না করিলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর মনোনয়নপত্র আপনা আপনি বাতিল হইয়া যাইবে।

[ (৩) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঢ) এর ক্ষেত্রে বিধিতে বর্ণিত কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয়বিধ দণ্ড বা, ক্ষেত্রমত, প্রার্থিতা বাতিল সংক্রান্ত বিধান করা যাইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, নির্বাচনী অপরাধের জন্য কারাদন্ডের মেয়াদ অন্যূন ছয় মাস এবং অনধিক সাত বৎসর এবং আচরণ বিধির কোন বিধান লংঘনের জন্য কারাদণ্ডের মেয়াদ অনধিক ছয় মাস অথবা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদণ্ড বা উভয়বিধ দণ্ডের বিধান করা যাইবে]
  
 
  
   
  
নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় 
১০। (১) নিম্নবর্ণিত সময়ে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত আসনে মহিলা সদস্যগণের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে; যথা:-

(ক) বিদ্যমান উপজেলাসমূহের ক্ষেত্রে এই অধ্যাদেশ বলবৎ হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী;

(খ) ধারা ৩(২) এর অধীনে ঘোষিত নূতন উপজেলার ক্ষেত্রে, উক্তরূপ ঘোষণার একশত আশি দিনের মধ্যে;

(গ) পরিষদের মেয়াদ শেষ হইবার ক্ষেত্রে, উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার তারিখের পূর্ববর্তী একশত আশি দিনের মধ্যে; এবং

(ঘ) পরিষদ, ধারা ৬৬ এর অধীনে বাতিল হইবার ক্ষেত্রে, বাতিলাদেশ জারির অনধিক একশত আশি দিনের মধ্যে।

(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ), (গ) এবং (ঘ) তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, দৈবদূর্বিপাকজনিত বা অন্যবিধ অনিবার্য কারণে উক্ত দফাসমূহে উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হইলে নির্বাচন কমিশন, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত সময়সীমার পরে উক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক তারিখ নির্ধারণ করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশ 
১১। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং সদস্য হিসাবে নির্বাচিত সকল ব্যক্তির নাম নির্বাচনের পর নির্বাচন কমিশন, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে।
  
 
  
  চতুর্থ অধ্যায়
নির্বাচনী বিরোধ
  
নির্বাচনী দরখাস্ত দাখিল 
১২। (১) এই অধ্যাদেশের অধীন অনুষ্ঠিত কোন নির্বাচন বা গৃহীত নির্বাচনী কার্যক্রমের বিষয়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ব্যতীত, কোন আদালত বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষের নিকট কোন আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে না।

(২) কোন নির্বাচনের প্রার্থী ব্যতীত, অন্য কোন ব্যক্তি উক্ত নির্বাচন বা নির্বাচনী কার্যক্রম বিষয়ে আপত্তি উত্থাপন ও প্রতিকার প্রার্থনা করিয়া নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে আবেদন করিতে পারিবেন না।

(৩) এই অধ্যাদেশের ধারা ১৩ এর অধীন গঠিত নির্বাচন ট্রাইব্যুনালের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্বাচনী অভিযোগপত্র পেশ করিতে হইবে।

(৪) কোন আদালত -

(ক) উপজেলা পরিষদের কোন চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্যের নির্বাচন মুলতবী রাখিতে;

(খ) এই অধ্যাদেশের অধীন নির্বাচিত কোন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্যকে তাহার দায়িত্ব গ্রহণে বিরত রাখিতে;

(গ) এই অধ্যাদেশের অধীন নির্বাচিত কোন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্যকে তাহার কার্যালয়ে প্রবেশ করা হইতে বিরত রাখিতে -

নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবে না।
  
 
  
   
  
নির্বাচন ট্রাইবুনাল ও নির্বাচন আপিল ট্রাইবুনাল গঠন 
১৩। (১) এই অধ্যাদেশের অধীন নির্বাচন সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশন একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল এবং একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচন আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন করিবে।

(২) কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য এর গেজেট প্রকাশিত হওয়ার ত্রিশ দিনের মধ্যে নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করিতে পারিবে।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল পরিষদের নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোন মামলা উহা দায়ের করিবার একশত আশি দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির করিবে।

(৪) নির্বাচন ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি নির্বাচন আপিল ট্রাইব্যুনালে ত্রিশ দিনের মধ্যে মামলা দায়ের করিতে পারিবে।

(৫) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী গঠিত নির্বাচন আপিল ট্রাইব্যুনাল আপিল দায়ের করিবার একশত বিশ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির করিবে।

(৬) নির্বাচন আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
  
 
  
   
  
নির্বাচনী দরখাস্ত স্থানান্তর 
১৪। নির্বাচন কমিশন নিজ উদ্যোগে অথবা এতদুদ্দেশ্যে কোন এক পক্ষের দরখাস্তের প্রেক্ষিতে মামলার যে কোন পর্যায়ে কোন নির্বাচনী দরখাস্ত বা আপিল এক ট্রাইব্যুনাল হইতে অন্য ট্রাইব্যুনালে, অথবা ক্ষেত্রমত, এক আপিল ট্রাইব্যুনাল হইতে অন্য আপিল ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত করিতে পারিবে; এবং স্থানান্তরিত দরখাস্ত বা আপিল যে পর্যায়ে স্থানান্তর করা হইয়াছে সেই পর্যায় হইতে উহার বিচার কার্য চলিতে থাকিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, নির্বাচনী দরখাস্ত বা আপিল যে ট্রাইব্যুনাল বা আপিল ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হইয়াছে সেই ট্রাইব্যুনাল উপযুক্ত মনে করিলে ইতিপূর্বে পরীক্ষিত কোন সাক্ষীকে পুনরায় তলব বা পরীক্ষা করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
নির্বাচনী দরখাস্ত, আপিল, ইত্যাদি নিষপত্তি 
১৫। নির্বাচনী দরখাস্ত ও আপিল দায়েরের পদ্ধতি, ট্রাইবু্যনাল ও আপিল ট্রাইবু্যনাল কর্তৃক নির্বাচন বিরোধ নিষ্পত্তির পদ্ধতি, এখতিয়ার, ক্ষমতা, প্রতিকার এবং আনুষঙ্গিক সকল বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
  
 
  
  পঞ্চম অধ্যায়
চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং সদস্যগণের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা
  
পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং সদস্যগণের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা 
১৬। (১) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন, যদি-

(ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হন;

(খ) তাহার বয়স পঁচিশ বছর পূর্ণ হয়; এবং

(গ) চেয়ারম্যানের বা ভাইস চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপজেলার ভোটার তালিকায় তাহার নাম লিপিবদ্ধ থাকে।

(২) কোন ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে নির্বাচিত হইবার জন্য এবং উক্তরূপ চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি-

(ক) বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন বা হারান;

(খ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত হন;

(গ) দেউলিয়া ঘোষিত হন এবং দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন;

(ঘ) কোন ফৌজদারি বা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাহার মুক্তি লাভের পর পাঁচ বৎসর কাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে;

(ঙ) প্রজাতন্ত্রের বা উপজেলার অথবা অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোন লাভজনক পদে সার্বক্ষণিক অধিষ্ঠিত থাকেন;

(চ) কোন বিদেশী রাষ্ট্র হইতে অনুদান বা তহবিল গ্রহণ করে এইরূপ বেসরকারী সংস্থার প্রধান কার্য নির্বাহী পদ হইতে পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণ বা পদচ্যুতির পর এক বৎসর অতিবাহিত না হইয়া থাকে;

(ছ) কোন সমবায় সমিতি এবং সরকারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ব্যতীত, সংশ্লিষ্ট উপজেলায় সরকারকে পণ্য সরবরাহ করিবার জন্য বা সরকার কর্তৃক গৃহীত কোন চুক্তির বাস্তবায়ন বা সেবা কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য, তাহার নিজ নামে বা তাহার ট্রাস্টি হিসাবে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নামে বা তাহার সুবিধার্থে বা তাহার উপলক্ষ্যে বা কোন হিন্দু যৌথ পরিবারের সদস্য হিসাবে তাহার কোন অংশ বা স্বার্থ আছে এইরূপ চুক্তিতে আবদ্ধ হইয়া থাকেন;

ব্যাখ্যা।- উপরি-উক্ত দফা (ছ) এর অধীন আরোপিত অযোগ্যতা কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না যেই ক্ষেত্রে-

(১) চুক্তিটিতে অংশ বা স্বার্থ তাহার উপর উত্তরাধিকারসূত্রে বা উইলসূত্রে প্রাপক, নির্বাহক বা ব্যবস্থাপক হিসাবে হস্তান্তরিত হয়, যদি না উহা হস্তান্তরিত হইবার পর ছয় মাস অতিবাহিত হয়; অথবা

(২) কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এ সংজ্ঞায়িত কোন পাবলিক কোম্পানীর দ্বারা বা পক্ষে চুক্তিটি সম্পাদিত হইয়াছে যাহার তিনি একজন শেয়ারহোল্ডার মাত্র, তবে উহার অধীন তিনি কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত পরিচালকও নহেন ম্যানিজিং এজেন্টও নহেন; অথবা

(৩) তিনি কোন যৌথ হিন্দু পরিবারের সদস্য হিসাবে চুক্তিটিতে তাহার অংশ বা স্বার্থ নাই এইরূপ কোন স্বতন্ত্র ব্যবসা পরিচালনাকালে পরিবারের অন্য কোন সদস্য কর্তৃক চুক্তি সম্পাদিত হইয়া থাক।

(জ) বা তাহার পরিবারের কোন সদস্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার কার্য সম্পাদনে বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত হন বা ইহার জন্য নিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা উপজেলার কোন বিষয়ে তাহার কোন প্রকার আর্থিক স্বার্থ থাকে;

(ঝ) এমন কোন কোম্পানীর পরিচালক বা ফার্মের অংশীদারগণ যাহার কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত কোন ঋণ বা উহার কোন কিস্তি মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পূর্ববর্তী এক বৎসরের মধ্যে পরিশোধে খেলাপী হইয়াছেন;

ব্যাখ্যা।- উপরি-উক্ত দফা (ঝ) এর উদ্দেশ্য সাধনকল্পে " ঋণ খেলাপী" অর্থ ঋণ গ্রহীতা ছাড়াও যিনি বা যাহাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোম্পানী বা ফার্ম Banker's Book of Account এ ঋণ খেলাপী হিসাবে চিহ্নিত আছে তাহাদেরকেও বুঝাইবে।

(ঞ) ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে তাহার গৃহীত কোন ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় অনাদায়ী রাখেন;

(ট) উপজেলা পরিষদের নিকট হইতে কোন ঋণ গ্রহণ করেন এবং তা অনাদায়ী রাখেন;

(ঠ) সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত নিরীক্ষকের প্রতিবেদন অনুযায়ী নির্ধারিত দায়কৃত অর্থ উপজেলা পরিষদকে পরিশোধ না করেন;

(ড) অন্য কোন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা জাতীয় সংসদের সদস্য হন;

(ঢ) কোন সরকারি বা আধা-সরকারি দপ্তর, কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সমবায় সমিতি বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগের চাকুরি হইতে নৈতিকস্খলন, দুর্নীতি, অসদাচরণ, ইত্যাদি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া চাকুরিচ্যুত, অপসারিত বা বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত হইয়াছেন এবং তাহার এইরূপ চাকুরিচ্যুতি, অপসারণ বা বাধ্যতামূলক অবসরের পর পাঁচ বৎসর কাল অতিক্রান্ত না হইয়া থাকে;

(ণ) সরকার কর্তৃক অনুদানপ্রাপ্ত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কোন সংস্থার সার্বক্ষণিক বা খণ্ডকালীন পদে নিয়োজিত থাকেন;

(ত) উপজেলা পরিষদের তহবিল তসরুফের কারণে দণ্ডপ্রাপ্ত হন;

(থ) বিগত পাঁচ বৎসরের মধ্যে যে কোন সময়ে দণ্ডবিধির ধারা ১৮৯ ও ১৯২ এর অধীন দোষী সাব্যস্ত হইয়া সাজাপ্রাপ্ত হন;

(দ) বিগত পাঁচ বৎসরের মধ্যে যে কোন সময়ে দণ্ডবিধির ধারা ২১৩, ৩৩২, ৩৩৩ ও ৩৫৩ এর অধীন দোষী সাব্যস্ত হইয়া সাজাপ্রাপ্ত হন;

(ধ) জাতীয় বা আন্তর্জাতিক আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক যুদ্ধাপরাধী হিসাবে দোষী সাব্যস্ত হন;

(ন) কোন আদালত কর্তৃক ফেরারী আসামী হিসাবে ঘোষিত হন; এবং

(প) নির্বাচনী অপরাধের জন্য শাস্তিপ্রাপ্ত হইয়া শাস্তিভোগের পর ন্যূনতম দুই বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে।

(৩) প্রত্যেক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্য পদপ্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় এই মর্মে একটি হলফনামা দাখিল করিবেন যে, উপ-ধারা (২) অনুযায়ী তিনি চেয়ারম্যান, বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য নির্বাচনের অযোগ্য নহেন।
  
 
  
   
  
একাধিক পদে প্রার্থীতায় বাঁধা 
১৭। (১) কোন ব্যক্তি একই সাথে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হইতে পারিবেন না।

(২) যদি কোন ব্যক্তি একই সাথে কোন উপজেলা পরিষদের একাধিক পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তাহা হইলে তাহার সকল মনোনয়নপত্র বাতিল হইবে।

(৩) উপজেলা পরিষদের মেয়াদকালে কোন কারণে চেয়ারম্যান পদ শূন্য হইলে, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে পারিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত ভাইস চেয়ারম্যানকে স্বীয় পদ ত্যাগ করিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে হইবে।

[ (৪) কোন ব্যক্তি একই সঙ্গে কোন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সদস্য এবং জাতীয় সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে পারিবেন না।]
  
 
  
  ষষ্ঠ অধ্যায়
পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সমপর্কিত বিধান
  
পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের শপথ বা ঘোষণা 
১৮। (১) চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বা সংরক্ষিত আসনের সদস্য তাহার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে প্রথম তফসিলে বর্ণিত ছকে সরকার কর্তৃক মনোনীত কোন ব্যক্তির সম্মুখে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা প্রদান করিবেন এবং শপথ বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিবেন।

(২) চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য হিসাবে নির্বাচিত ব্যক্তিগণের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইবার ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকার বা তৎকর্তৃক মনোনীত কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যকে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা প্রদানের ব্যবস্থা করিবে।

(৩) চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর, কোন ব্যক্তি কোন রাজনৈতিক দলের কোন স্তরের কমিটির, উহা যে কোন নামেই অভিহিত হউক না কেন, পদাধিকারী হইলে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণার পূর্বে তাহাকে উক্ত পদ ত্যাগ করিতে হইবে।
  
 
  
   
  
সম্পত্তি সম্পর্কিত ঘোষণা 
১৯। (১) চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং সংরক্ষিত আসনের সদস্যদেরকে শপথ বা ঘোষণা প্রদানের সময় ট্যাক্স পেয়ারস্ আইডেন্টিফিকেশন নম্বরসহ (টি.আই.এন) যদি থাকে, সংশ্লিষ্ট কর অফিসে দাখিলকৃত ও গৃহীত তাহার এবং তাহার পরিবারের সদস্যদের দেশে বা বিদেশে অবস্থিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির সর্বশেষ বিবরণ, একটি হলফনামার মাধ্যমে দাখিল করিতে হইবে।

(২) সংশ্লিষ্ট কর অফিসে দাখিলকৃত ও গৃহীত (টি.আই.এন, যদি থাকে) সম্বলিত সম্পত্তির সর্বশেষ হিসাব দাখিল করিতে না পারিলে বা করা না হইলে চেয়ারম্যান এবং প্রত্যেক সদস্য শপথ গ্রহণ বা ঘোষণার সময় তাহার এবং তাহার পরিবারের যে কোন সদস্যের স্বত্ব, দখল বা স্বার্থ আছে এই প্রকার যাবতীয় স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির একটি লিখিত বিবরণ হলফনামার মাধ্যমে দাখিল করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত হলফনামা এবং উপ-ধারা (২) এর অধীন দাখিলকৃত লিখিত বিবরণ অসত্য প্রমাণিত হইলে, উহা অসদাচরণ গণ্য হইবে এবং অসদাচরণের অভিযোগে ক্ষেত্রমত, চেয়ারম্যান বা সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।

ব্যাখ্যাঃ- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ''পরিবারের সদস্য'' বলিতে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের স্ত্রী বা স্বামী এবং তাহার সহিত বসবাসকারী এবং তাহার উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল পিতা, মাতা, পুত্র, কন্যা, সৎপুত্র, সৎকন্যা, ভ্রাতা ও ভগ্নিকে বুঝাইবে।
  
 
  
   
  
পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের কার্যকাল 
২০। (১) কোন পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ, এই অধ্যাদেশের বিধানাবলী সাপেক্ষে, সংশ্লিষ্ট পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠানের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসর সময়ের জন্য উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন; তবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নূতন গঠিত পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত না হইলে সরকার উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে সভা আহবানের জন্য দায়িত্ব অর্পণ করিতে পারিবে এবং অনুরূপভাবে অনুষ্ঠিত সভা পরিষদের প্রথম সভা হিসাবে গণ্য হইবে।

(২) পরিষদ গঠনের জন্য কোন সাধারণ নির্বাচন ঐ পরিষদের জন্য অনুষ্ঠিত পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসর পূর্ণ হইবার ১৮০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হইবে।
  
 
  
   
  
দায়িত্ব হস্তান্তর 
২১। পরিষদ গঠনের পর পূর্ববর্তী চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য তাহার দখলে বা নিয়ন্ত্রণে থাকা পরিষদের সকল নগদ অর্থ, পরিসম্পদ, দলিল দস্তাবেজ, রেজিস্টার ও সীলমোহর যতশীঘ্র সম্ভব অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্মকর্তা কর্তৃক স্থিরীকৃত তারিখ, সময় ও স্থানে নতুন নির্বাচিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বা ক্ষেত্র বিশেষে মনোনীত প্যানেল চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রাপ্ত সদস্যের নিকট, পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বা ক্ষেত্রমত, সচিব ও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্মকর্তার মনোনীত একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বুঝাইয়া দিবেন।
  
 
  
   
  
ব্যত্যয়ের দণ্ড 
২২। যদি কোন চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন সদস্য ধারা ২১ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে তিনি অনধিক বিশ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
  
 
  
   
  
চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যগণের পদত্যাগ 
২৩। (১) কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য তাহার পদত্যাগ করিবার অভিপ্রায় নির্ধারিত ফরমে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিতভাবে ব্যক্ত করিয়া পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং ঐরূপ পদত্যাগ পত্র দাখিলের সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্যের পদ শূন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পদত্যাগের বিষয়টি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বা ক্ষেত্রমত, সচিব পদত্যাগপত্র প্রাপ্তির অনধিক তিন দিনের মধ্যে পরিষদ, নির্বাচন কমিশন এবং সরকারকে অবহিত করিবেন।
  
 
  
   
  
চেয়ারম্যানের প্যানেল 
২৪। (১) পরিষদ গঠিত হইবার পর প্রথম অনুষ্ঠিত সভার এক মাসের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যানগণ তাহাদের নিজেদের মধ্য হইতে অগ্রাধিকারক্রমে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি চেয়ারম্যানের প্যানেল নির্বাচিত করিবেন।

(২) অনুপস্থিতি, অসুস্থতাহেতু বা অন্য যে কোন কারণে চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে তিনি পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত চেয়ারম্যানের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন ভাইস চেয়ারম্যান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) পদত্যাগ, অপসারণ, মৃত্যুজনিত অথবা অন্য যে কোন কারণে চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে নতুন চেয়ারম্যানের কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত চেয়ারম্যানের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন ভাইস চেয়ারম্যান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৪) এই অধ্যাদেশের বিধান অনুযায়ী চেয়ারম্যানের প্যানেলভুক্ত ভাইস চেয়ারম্যানগণ অযোগ্য হইলে অথবা ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করিলে পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে সদস্যগণের মধ্য হইতে নূতন চেয়ারম্যানের প্যানেল তৈরী করা যাইবে।

(৫) উপ-ধারা (১) ও (৪) অনুযায়ী চেয়ারম্যান প্যানেল নির্বাচিত না হইলে সরকার প্রয়োজন অনুসারে চেয়ারম্যান প্যানেল তৈরী করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যগণের সাময়িক বরখাস্তকরণ 
২৫। (১) যে ক্ষেত্রে কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যের অপসারণের জন্য ধারা ২৬ এর অধীন কার্যক্রম আরম্ভ করা হইয়াছে, অথবা তাহার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হইয়াছে, সেইক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য কর্তৃক ক্ষমতা প্রয়োগ পরিষদের স্বার্থের পরিপন্থী অথবা প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন না হইলে, সরকার কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, লিখিত আদেশের মাধ্যমে চেয়ারম্যান অথবা ভাইস চেয়ারম্যান অথবা মহিলা সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিষদের চেয়ারম্যানকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে উক্ত আদেশ প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে সাময়িকভাবে বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান, তাহার অনুপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকারী ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য (প্যানেল চেয়ারম্যান) এর নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করিবেন এবং উক্ত সদস্য চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা চেয়ারম্যান অপসারিত হইলে তাহার স্থলে নূতন চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিষদের কোন সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে উক্ত সদস্যের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা উক্ত সদস্য অপসারিত হইলে তাহার স্থলে নূতন সদস্য নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে একজন সদস্য উক্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।
  
 
  
   
  
চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যগণের অপসারণ 
২৬। (১) চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য তাহার স্বীয় পদ হইতে অপসারণযোগ্য হইবেন, যদি তিনি-

(ক) পরিষদের নোটিশ প্রাপ্তি সত্ত্বেও তিনি যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে পরিষদের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন;

(খ) পরিষদের বা রাষ্ট্রের স্বার্থের হানিকর কোন কার্যকলাপে জড়িত থাকেন অথবা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হন;

(গ) দায়িত্ব পালন করিতে অস্বীকার করেন অথবা শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন;

(ঘ) অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী হন অথবা পরিষদের কোন অর্থ বা সম্পত্তির কোন ক্ষতি সাধন বা উহার আত্মসাতের বা অপপ্রয়োগের জন্য দায়ী হন;

(ঙ) নির্বাচনের পর ধারা ১৬ (২) অনুযায়ী নির্বাচনের অযোগ্য ছিলেন মর্মে প্রমাণিত হয়;

(চ) বার্ষিক ১২ টি মাসিক সভার স্থলে ন্যূনতম ৯ টি সভা গ্রহণযোগ্য কারণ ব্যতীত অনুষ্ঠান করিতে বা উপস্থিত থাকিতে ব্যর্থ হন;

(ছ) নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব দাখিল না করেন কিংবা দাখিলকৃত হিসাবে অসত্য তথ্য প্রদান করেন।

ব্যাখ্যা।- এই উপ-ধারায় বর্ণিত 'অসদাচরণ' বলিতে ক্ষমতার অপব্যবহার, ধারা ১৯ অনুযায়ী সম্পত্তি সম্পর্কিত ঘোষণা প্রদান না করা কিংবা অসত্য হলফনামা দাখিল করা, আইন ও বিধির পরিপন্থী কার্যকলাপ, দুর্নীতি, অসদুপায়ে ব্যক্তিগত সুবিধা গ্রহণ, পক্ষপাতিত্ব, স্বজনপ্রীতি, ইচ্ছাকৃত অপশাসন, ইত্যাদি বুঝাইবে।

(২) সরকার, কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কারণে চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যকে অপসারণ করিতে পারিবে।

(৩) অপসারণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করিবার পূর্বে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, তদন্ত ও অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হইবে।

(৪) একজন চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ কিংবা উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী অপসারণের প্রস্তাব নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদন লাভের পর তাৎক্ষণিকভাবে অপসারিত হইবেন।

(৫) পরিষদের কোন চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যকে উপ-ধারা (১) অনুযায়ী তাহার পদ হইতে অপসারিত করা হইলে, তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কোন কর্তৃপক্ষের নিকট ঐ আদেশের তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে আপিল করিতে পারিবেন।

(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীন আপিল করা হইলে আপিল কর্তৃপক্ষ উক্ত আপিলটি নিষপত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপসারণ আদেশটি স্থগিত রাখিতে পারিবেন এবং আপিলকারীকে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ প্রদানের পর উক্ত আদেশটি পরিবর্তন, বাতিল বা বহাল রাখিতে পারিবেন।

(৭) আপিল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উপ-ধারা (৬) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত হইবে।

(৮) এই অধ্যাদেশের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারা অনুযায়ী অপসারিত কোন ব্যক্তি কোন পদে সংশ্লিষ্ট পরিষদের কার্যকালের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না।

(৯) ধারা ৫ এর (গ) ও (ঘ) উপ-ধারার বিধান অনুসারে যে সকল ব্যক্তি উপজেলা পরিষদের সদস্য হিসাবে থাকিবেন, তাহাদের বিরুদ্ধে ধারা ২৫ ও ২৬ অনুযায়ী কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন হইলে সংশ্লিষ্ট আইন বা অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।
  
 
  
   
  
চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্যপদ শূন্য হওয়া এবং শূন্য পদ পূরণ 
২৭। (১) পরিষদের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদ শূন্য হইবে, যদি তিনি -

(ক) ধারা ১৬ (২) অনুযায়ী চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য হইবার অযোগ্য হইয়া পড়েন; বা

(খ) ধারা ২৬ অনুযায়ী অপসারিত হন; বা

(গ) ধারা ১৮ এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা প্রদান করিতে ব্যর্থ হন বা ধারা ১৯ এর অধীন হলফনামা দাখিল করিতে ব্যর্থ হন; বা

(ঘ) ধারা ২৩ এর অধীন পদত্যাগ করেন; বা

(ঙ) মৃত্যুবরণ করেন।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদ শূন্য হইলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা পদটি শূন্য ঘোষণা করিবে।

(৩) পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওযার পূর্ববর্তী একশত আশি দিনের পূর্বে কোন চেয়ারম্যান, ভইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যের পদ শূন্য হইলে পদটি শূন্য হইবার তারিখ হইতে নব্বই দিনের মধ্যে এবং পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্ববর্তী একশত আশি দিনের পূর্বে কোন সদস্যের পদ শূন্য হইলে পদটি শূন্য হইবার তারিখ হইতে ষাট দিনের মধ্যে পূরণ করিতে হইবে এবং যিনি উক্ত পদে নির্বাচিত হইবেন, তিনি পরিষদের কেবলমত্র অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, নব্বই দিনের মধ্যে, বা ক্ষেত্রমত, ষাট দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা সম্ভব না হইলে নির্বাচন কমিশন উক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নূতন তারিখ নির্ধারণ করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
সদস্যপদ পুনর্বহাল 
২৮। পরিষদের কোন নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য এই অধ্যাদেশের বিধান অনুযায়ী অপসারিত হইয়া অথবা অযোগ্য ঘোষিত হইয়া সদস্যপদ হারাইবার পর আপিল বা রিভিশনে তাহার উক্তরূপ অপসারণ আদেশ রদ বা বাতিল হইলে বা তাহার অযোগ্যতা অবলোপন হইলে তিনি অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য স্বপদে বহাল হইবেন।
  
 
  
   
  
চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের অধিকার ও দায়বদ্ধতা 
২৯। (১) পরিষদের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা প্রত্যেক সদস্যের এই অধ্যাদেশ ও সংশ্লিষ্ট বিধানাবলী সাপেক্ষে পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার থাকিবে।

(২) পরিষদের প্রত্যেক সদস্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সভাপতির নিকট পরিষদের বা স্থায়ী কমিটির প্রশাসনিক এখতিয়ারভুক্ত বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন বা কৈফিয়ৎ দাবী করিতে পারিবেন।

(৩) পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে নোটিশ প্রদান করিয়া পরিষদের যে কোন সদস্য অফিস চলাকালীন সময়ে গোপনীয় নথিপত্র ব্যতীত অন্যান্য রেকর্ড ও নথিপত্র দেখিতে পারিবেন।

(৪) পরিষদের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা প্রত্যেক সদস্য পরিষদ বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়িত কোন কাজ বা প্রকল্পের ত্রুটি বিচ্যুতি সম্পর্কে পরিষদের মনোযোগ আকর্ষণ করিতে পারিবেন।

(৫) পরিষদের চেয়ারম্যান, স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সদস্যগণ এই অধ্যাদেশের বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে পরিষদের কার্য পরিচালনা করিবেন এবং পরিষদের নিকট যৌথভাবে দায়ী থাকিবেন।
  
 
  
   
  
চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যানগণের ছুটি 
৩০। কোন চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যানকে পরিষদ যুক্তিসঙ্গত কারণে এক বৎসরে সর্বোচ্চ তিন মাস ছুটি মঞ্জুর করিতে পারিবে; তবে ইহার অধিক ছুটির প্রয়োজন হইলে সরকারের অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, মহিলা চেয়ারম্যান/ভাইস চেয়ারম্যানের মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগের ক্ষেত্রে সরকারি বিধি-বিধান প্রযোজ্য হইবে।
  
 
  
  সপ্তম অধ্যায়
পরিষদের সভা, ক্ষমতা ও কার্যাবলী
  
পরিষদের সভা 
৩১। (১) উপজেলা পরিষদ, পরিষদের কার্যালয়ে প্রতিমাসে ন্যূনতম একটি সভা অনুষ্ঠান করিবে এবং উক্ত সভা অফিস সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, নূতন গঠিত কোন পরিষদের প্রথম সভা শপথ গ্রহণের এক মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হইতে হইবে।

(২) পরিষদের ৫০% সদস্য (ভাইস চেয়ারম্যানসহ) তলবী সভা আহবানের জন্য চেয়ারম্যানের বরাবরে লিখিত অনুরোধ জানাইলে তিনি পনের দিনের মধ্যে অনুষ্ঠেয় একটি সভার তারিখ ও সময় নির্ধারণ করিয়া সভা অনুষ্ঠানের কমপক্ষে সাত দিন পূর্বে পরিষদের সদস্যগণকে নোটিশ প্রদান করিবেন।

(৩) পরিষদের চেয়ারম্যান উপ-ধারা (২) এর অধীন তলবী সভা আহবান করিতে ব্যর্থ হইলে পূর্বোক্ত ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ দশ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠেয় সভা আহবান করিয়া অন্যূন সাত দিন পূর্বে পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্যগণকে নোটিশ প্রদান করিবেন এবং এইরূপ সভা পরিষদের কার্যালয়ে নির্ধারিত তারিখে অফিস চলাকালীন সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৪) তলবী সভায় নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়োগকৃত একজন কর্মকর্তা পর্যবেক্ষক হিসাবে উপস্থিত থাকিতে পারিবেন, যিনি উক্তরূপ তলবী সভা পরিচালনা ও সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়ে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট একটি লিখিত প্রতিবেদন সভা অনুষ্ঠানের সাত দিনের মধ্যে দাখিল করিবেন।

(৫) চেয়ারম্যান অথবা তাহার অনুপস্থিতিতে তাহার দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি, প্রয়োজনে, যে কোন সময় পরিষদের বিশেষ সভা আহবান করিতে পারিবেন।

(৬) সদস্যগণের মোট সংখ্যার (ভাইস চেয়ারম্যানসহ) অন্যূন এক তৃতীয়াংশের উপস্থিতিতে পরিষদের সভার কোরাম গঠিত হইবে এবং কোরামের অভাবে কোন সভা মুলতবী হইলে মুলতবী সভায় কোন কোরামের প্রয়োজন হইবে না।

(৭) এই অধ্যাদেশের ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে, পরিষদের সভায় সকল সিদ্ধান্ত উপস্থিত সদস্যগণের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হইবে।

(৮) প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতি একটি দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদান করিতে পারিবেন।

(৯) পরিষদের সভায় চেয়ারম্যান অথবা তাহার অনুপস্থিতিতে ধারা ২৪ অনুযায়ী তাহার দায়িত্বপালনকারী সদস্য, অথবা উভয়ের অনুপস্থিতিতে, উপস্থিত সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত কোন সদস্য সভাপতিত্ব করিবেন।

(১০) সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত কর্মকর্তাগণ পরিষদের আমন্ত্রণে পরিষদের সভায় যোগদান এবং সভার আলোচনায় অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন, তবে তাহাদের ভোটাধিকার থাকিবে না।

(১১) কোন প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হইয়াছে বা হয় নাই তাহা সভাপতি উক্ত সভায় স্পষ্ট করিয়া জানাইয়া দিবেন।

(১২) সভার আলোচ্যসূচিতে কারিগরি ও গুরুত্বপুর্ণ বিষয়ে কোনো বিশেষজ্ঞের মতামত প্রয়োজন হইলে পরিষদ উক্ত বিষয় বা বিষয়সমূহে মতামত প্রদানের জন্য এক বা একাধিক বিশেষজ্ঞকে সভায় আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে।
  
 
  
   
  
পরিষদের সভায় সমপাদনীয় কার্য তালিকা 
৩২। পরিষদের কোন মুলতবী সভা ব্যতীত অন্য প্রত্যেক সভায় সম্পাদনীয় কার্যাবলীর একটি তালিকা, ঐরূপ সভার জন্য নির্ধারিত সময়ের অন্তত সাতদিন পূর্বে পরিষদের প্রত্যেক সদস্যের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং সভায় উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠের অনুমোদন ব্যতীত, ঐরূপ তালিকা বহির্ভূত কোন বিষয় সভায় আলোচনার জন্য আনীত হইবে না বা সম্পাদিত হইবে না; তবে, যদি চেয়ারম্যান মনে করেন যে, এইরূপ পরিস্থিতির উদ্ভব হইয়াছে যাহার জন্য পরিষদের একটি জরুরি সভা আহবান করা সমীচীন, তাহা হইলে তিনি সদস্যগণকে তিন দিনের নোটিশ প্রদানের পর এইরূপ একটি সভা আহবান করিতে পারিবেন এবং উক্ত সভায় নির্ধারিত আলোচ্যসূচি ব্যতীত অন্য কোন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যাইবে না।
  
 
  
   
  
পরিষদের কার্যাবলী নিষ্পন্ন 
৩৩। (১) পরিষদের কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত সীমার মধ্যে ও পদ্ধতিতে উহার সভায় বা স্থায়ী কমিটিসমূহের সভায় অথবা উহার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কর্তৃক নিষ্পন্ন করা হইবে।

(২) কোন পদ শূন্য থাকিলে বা পরিষদের গঠন প্রক্রিয়ায় কোন ত্রুটি রহিয়াছে কিংবা পরিষদের বৈঠকে উপস্থিত হইবার বা ভোটদানে বা অন্য উপায়ে ইহার কার্যধারায় অংশগ্রহণে অধিকার না থাকা সত্ত্বেও কোন ব্যক্তি অনুরূপ কার্য করিয়াছেন কেবল এই কারণে পরিষদের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না।

(৩) পরিষদের প্রত্যেক সভার কার্যবিবরণী এই উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত একটি বইয়ে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।

(৪) সভার কার্যবিবরণী স্বাক্ষরিত হইবার পর যথাশীঘ্র সম্ভব পরিষদের সকল সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করিয়া অনুলিপি স্থানীয় সরকার বিভাগের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
  
 
  
   
  
স্থায়ী কমিটি গঠন 
৩৪। (১) উপজেলা পরিষদ উহার কার্যাবলী সুচারুরূপে সম্পাদন করিবার জন্য পরিষদের দায়িত্বভার গ্রহণের পর প্রথম সভা অনুষ্ঠানের ত্রিশ দিনের মধ্যে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদির প্রত্যেকটি সম্পর্কে একটি করিয়া স্থায়ী কমিটি গঠন করিবে যাহার মেয়াদ সর্বোচ্চ দুই বৎসর ছয় মাস হইবে, যথাঃ-

(ক) আইন-শৃংখলা;

(খ) স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা;

(গ) কৃষি, মৎস্য ও পশুসম্পদ, সেচ ও পরিবেশ;

(ঘ) শিক্ষা;

(ঙ) সমাজকল্যাণ, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন;

(চ) ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও যুব উন্নয়ন;

(ছ) যোগাযোগ ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন;

(জ) সংস্থাপন, অর্থ ও হিসাব;

(ঝ) পরিবীক্ষণ এবং মূল্যায়ন।

(২) উপরি-উক্ত স্থায়ী কমিটি ব্যতীত পরিষদ, এই অধ্যাদেশের বিধান সাপেক্ষে, প্রয়োজনে, অতিরিক্ত স্থায়ী কমিটি গঠন করিতে পারিবে।

(৩) স্থায়ী কমিটির সভাপতি কো-অপট সদস্য ব্যতীত পরিষদের সদস্যগণের মধ্য হইতে নির্বাচিত হইবেন এবং মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসন হইতে নির্বাচিত সদস্যগণ অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ স্থায়ী কমিটির সভাপতি থাকিবে।

(৪) স্থায়ী কমিটি পাঁচ হইতে সাত সদস্য বিশিষ্ট হইবে এবং কমিটি, প্রয়োজনে, বিশেষজ্ঞ কো-অপট করিতে পারিবে, তবে তাহাদের ভোটাধিকার থাকিবে না।

(৫) অন্যান্য সদস্যগণ স্থানীয় জনসাধারণের মধ্য হইতে সংশ্লিষ্ট কমিটিতে অবদান রাখিবার যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্য হইতে মনোনীত হইবেন।

(৬) পরিষদের সাধারণ সভায় স্থায়ী কমিটির সকল সিদ্ধান্ত বিবেচিত এবং বিবেচনার পর গৃহীত হইবে।

(৭) নিম্নলিখিত কারণে পরিষদ কোন স্থায়ী কমিটি ভাঙ্গিয়া দিতে পারিবে, যথাঃ-

(ক) বিধি মোতাবেক নিয়মিত সভা আহবান করিতে না পারিলে;

(খ) নির্ধারিত ক্ষেত্রে ক্রমাগতভাবে পরিষদকে পরামর্শ প্রদানে ব্যর্থ হইলে;

(গ) এই অধ্যাদেশ বা অন্য কোন আইনের বিধান বহির্ভূত কোন কাজ করিলে।

(৮) প্রত্যেক স্থায়ী কমিটি প্রতি দুইমাস অন্তর সভায় মিলিত হইবে, তবে প্রয়োজনে অতিরিক্ত সভা অনুষ্ঠান করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা 
৩৫। (১) এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য সাধন এবং পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নকল্পে চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন।

(২) এই অধ্যাদেশের অন্যান্য ধারায় বর্ণিত বিষয়সমূহকে খর্ব না করিয়া, চেয়ারম্যান নিম্নবর্ণিত দায়িত্বসমূহ পালন করিবেন, যথা: -

(ক) তিনি পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং সভা পরিচালনা করিবেন;

(খ) পরিষদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর কার্যক্রম তদারক ও নিয়ন্ত্রণ করিবেন এবং তাহাদের গোপনীয় প্রতিবেদন প্রস্তুত করিবেন;

(গ) সরকার বা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত সীমা পর্যন্ত আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করিবেন;

(ঘ) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে যৌথ স্বাক্ষরে পরিষদের সকল আয় ব্যয়ের হিসাব পরিচালনা করিবেন;

(ঙ) পরিষদের ব্যয় মিটানো এবং পাওনা আদায়ের জন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে ক্ষমতা অর্পন করিবেন;

(চ) এই অধ্যাদেশের অধীন প্রয়োজনীয় সকল বিবরণী ও প্রতিবেদন প্রস্তুত করিবেন;

(ছ) এই অধ্যাদেশ বা বিধি দ্বারা আরোপিত অন্যান্য ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) চেয়ারম্যান, পরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে, প্রচলিত আইন, অধ্যাদেশ বা বিধি-বিধান এর পরিপন্থী নয়, এইরূপ জনস্বার্থ বা জনগুরুত্বপূর্ণ কোন জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য নির্দেশ দিতে পারিবেন, এবং এই ধরনের কার্য সম্পাদনের ব্যয়ভার পরিষদ তহবিল হইতে বহনের নির্দেশ দিতে পারিবেন।

(৪) উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে চেয়ারম্যান পরিষদের পরবর্তী সভায় একটি প্রতিবেদন প্রদান করিবেন এবং উহা পরিষদের সভায় অনুমোদিত হইতে হইবে।

(৫) উপরি-উক্ত উপ-ধারাসমূহে বর্ণিত দায়িত্ব ছাড়াও চেয়ারম্যান নিম্নলিখিত ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন, যথা:-

(ক) তিনি পরিষদের সভায় পরিষদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ ও অন্যান্য সরকারি দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের উপস্থিতি নিশ্চিত করিবেন;

(খ) তিনি এই অধ্যাদেশ বা তদধীন প্রণীত বিধির পরিপন্থী এবং প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলার কারণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং স্থানান্তরিত অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তা বা কর্মচারী ব্যতীত পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্য কর্মচারীগণকে প্রয়োজনে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করিয়া সাময়িক বরখাস্ত করিতে পারিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, পরিষদের পরবর্তী সাধারণ সভায় উক্তরূপ সাময়িক বরখাস্ত অনুমোদিত হইতে হইবে, অন্যথায় উহা কার্যকর হইবে না;

(গ) তিনি পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিব বা অন্য কোন কর্মচারীর নিকট হইতে পরিষদের প্রশাসনিক বিষয় সংক্রান্ত যেকোন রেকর্ড বা নথি লিখিতভাবে তলব করিতে এবং এই অধ্যাদেশ বা বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন; তবে, তিনি এইরূপ কোন রেকর্ড বা নথি তলব করিতে পারিবেন না, যাহা সম্পূর্ণরূপে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিব বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিজস্ব তত্ত্বাবধানে থাকিবে;

(ঘ) তাহার বিবেচনায় পরিষদের কোন সিদ্ধান্ত এই অধ্যাদেশ বা অন্য কোন আইন বা বিধি পরিপন্থী হইলে, অথবা উক্তরূপ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হইলে উহা জনস্বাস্থ্য, জনস্বার্থ ও জননিরাপত্তা বিপন্ন করিবে বলিয়া বিবেচিত হইলে, তিনি তাহা কমিশন ও সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন।

(৬) পরিষদের নির্বাহী বা অন্য কোন কার্য পরিষদের নামে গৃহীত হইয়াছে বলিয়া প্রকাশ করা হইবে এবং উহা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রমাণিকৃত হইতে হইবে।

(৭) পরিষদের দৈনন্দিন সেবা প্রদানমূলক দায়িত্ব ত্বরান্বিত করিবার লক্ষ্যে কর্মকর্তাদের মধ্যে নির্বাহী ক্ষমতা বিভাজনের প্রস্তাব পরিষদের সভায় অনুমোদিত হইবে এবং প্রয়োজনবোধে সময়ে সময়ে উহা সংশোধনের এখতিয়ার পরিষদের থাকিবে।
  
 
  
   
  
পরিষদের কার্যাবলী 
৩৬। (১) পরিষদের প্রধান কার্যাবলী নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) প্রশাসন ও সংস্থাপন বিষয়াদি;

(খ) জনশৃংখলা রক্ষা;

(গ) জনকল্যাণমূলক কার্য সম্পর্কিত সেবা; এবং

(ঘ) স্থানীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সমপর্কিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।

(২) উপরি-উক্ত মৌলিক কার্যাবলীর উপর ভিত্তি করিয়া পরিষদের কার্যাবলী দ্বিতীয় তফসিলে বর্ণিত হইল।

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহাই থাকুক না কেন, বিশেষ করিয়া এবং উপরি-উক্ত উপ-ধারাসমূহের সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, সরকার ভাইস চেয়ারম্যান এবং সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বিধি দ্বারা নির্ধারণ করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
নাগরিক সনদ প্রকাশ 
৩৭। (১) এই অধ্যাদেশের আওতায় গঠিত প্রতিটি উপজেলা পরিষদ সরকার কর্তৃক প্রণীত নির্দেশিকা অনুসরণ করিয়া বিভিন্ন প্রকারের নাগরিক সেবা প্রদানের বিবরণ, সেবা প্রদানের শর্তসমূহ এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সেবা প্রদান নিশ্চিত করিয়া বিবরণ প্রকাশ করিবে যাহা "নাগরিক সনদ" বলিয়া অভিহিত হইবে।

(২) নাগরিক সনদ সময়ে সময়ে হাল নাগাদ করিতে হইবে।

(৩) সরকার, কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, উপজেলা পরিষদের জন্য আদর্শ নাগরিক সনদ সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রণয়ন করিবে।

(৪) নাগরিক সনদ সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার নিম্নবর্ণিত বিষয়সহ অন্যান্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত করিয়া নাগরিক সনদ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করিবে, যথা:-

(ক) প্রতিটি সেবার নির্ভুল ও স্বচ্ছ বিবরণ;

(খ) সেবা প্রদানের মূল্য;

(গ) সেবা গ্রহণ ও দাবি করা সংক্রান্ত যোগ্যতা ও প্রক্রিয়া;

(ঘ) সেবা প্রদানের নির্দিষ্ট সময়সীমা;

(ঙ) সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে নাগরিকদের দায়িত্ব;

(চ) সেবা প্রদানের নিশ্চয়তা;

(ছ) সেবা প্রদান সংক্রান্ত অভিযোগ নিষপত্তির প্রক্রিয়া; এবং

(জ) সনদে উল্লিখিত অঙ্গীকার লংঘনের ফলাফল।
  
 
  
   
  
উন্নততর তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও সুশাসন 
৩৮। (১) প্রত্যেক উপজেলা পরিষদ সুশাসন নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে উন্নততর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার আর্থিক ও কারিগরি সাহায্যসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদান করিবে।

(৩) পরিষদ নাগরিক সনদে বর্ণিত আধুনিক সেবা সংক্রান্ত বিষয়সহ সরকারিভাবে প্রদত্ত সকল সেবার বিবরণ উন্নততর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিকদের জ্ঞাত করিবার ব্যবস্থা করিবে।
  
 
  
  অষ্টম অধ্যায়
পরিষদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা, সম্পদ ও তহবিল
  
পরিষদের সম্পত্তি অর্জন, দখলে রাখিবার ও নিষ্পত্তি করিবার ক্ষমতা 
৩৯। (১) উপজেলা পরিষদের সম্পত্তি অর্জনের, দখলে রাখিবার ও নিষ্পত্তি করিবার এবং চুক্তিবদ্ধ হইবার ক্ষমতা থাকিবে; তবে, স্থাবর সমপত্তি অর্জন বা নিষ্পত্তির সকল ক্ষেত্রে পরিষদকে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।

(২) সরকার বিধি দ্বারা -

(ক) পরিষদের মালিকানাধীন বা উহার উপর ন্যস্ত সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য বিধান করিতে পারিবে;

(খ) উক্ত সম্পত্তির হস্তান্তর নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে; এবং

(গ) এই অধ্যাদেশ কার্যকর করিবার উদ্দেশ্যে সরকার পরিষদের জন্য প্রয়োজনীয় স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করিতে পারিবে।

(৩) পরিষদ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে-

(ক) উহার মালিকানাধীন বা উহার উপর বা উহার তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত যে কোন সমপত্তির ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ, পরিদর্শন ও উন্নয়ন করিতে পারিবে;

(খ) এই অধ্যাদেশ বা বিধির উদ্দেশ্য পূরণকল্পে উক্ত সম্পত্তি কাজে লাগাইতে পারিবে; এবং

(গ) দান, বিক্রয়, বন্ধক, ইজারা বা বিনিময়ের মাধ্যমে বা অন্য কোন পন্থায় যেকোন সমপত্তি অর্জন বা হস্তান্তর করিতে পারিবে।

(৪) পরিষদ যথাযথ জরিপের মাধ্যমে ইহার নিয়ন্ত্রণাধীন সকল সমপত্তির বিবরণাদি প্রস্তুত করিয়া প্রতি বৎসর হালনাগাদ করিবে এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, সমপদের বিবরণী, মানচিত্র প্রস্তত করিয়া উহার একটি অনুলিপি নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিবে।

(৫) এই অধ্যাদেশ বা বিধির দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি উপেক্ষা বা লংঘন করিয়া যদি সম্পত্তি অর্জন, দখল ও নিষ্পত্তি করা হয়, তাহা হইলে তাহা অবৈধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও প্রদানকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ আইনতঃ দায়ী থাকিবেন।
  
 
  
   
  
পরিষদকে সম্পদ হস্তান্তর 
৪০। সরকার, কোন উপজেলা পরিষদকে উহার স্থানীয় অধিক্ষেত্রের মধ্যে অবস্থিত কোন সরকারি সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট আইন বা বিধি-বিধান অনুযায়ী হস্তান্তর করিয়া দিতে পারিবে এবং ঐরূপ সম্পত্তি উক্ত পরিষদে বর্তাইবে ও উহার নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকিবে।
  
 
  
   
  
পরিষদের তহবিল 
৪১। (১) প্রত্যেক উপজেলা পরিষদের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিষদের নামে একটি তহবিল থাকিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত তহবিলে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথাঃ-

(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান ও মঞ্জুরী;

(খ) এই অধ্যাদেশের বিধান অনুযায়ী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সকল স্থানীয় উৎস হইতে আয়;

(গ) অন্য কোন পরিষদ কিংবা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান ও মঞ্জুরী;

(ঘ) সরকার কর্তৃক মঞ্জুরীকৃত ঋণসমূহ (যদি থাকে);

(ঙ) পরিষদ কর্তৃক প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আদায়কৃত সকল কর, রেইট ও ফি বাবদ অর্থ;

(চ) পরিষদের উপর ন্যস্ত এবং তৎকর্তৃক নির্মিত বা নিয়ন্ত্রিত বা পরিচালিত বিদ্যালয়, হাসপাতাল, ঔষধালয়, ভবন, প্রতিষ্ঠান বা পূর্ত কার্য হইতে প্রাপ্ত সকল আয় বা মুনাফা;

(ছ) কোন ট্রাস্টের নিকট হইতে উপঢৌকন বা অনুদান হিসাবে প্রাপ্ত অর্থ;

(জ) এই অধ্যাদেশের অধীন প্রাপ্ত অর্থদণ্ডের অর্থ; এবং

(ঝ) পরিষদ কর্তৃক প্রাপ্ত অন্য সকল প্রকার অর্থ।
  
 
  
   
  
পরিষদের ব্যয় 
৪২। (১) তহবিলের অর্থ নিম্নলিখিত খাতসমূহে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যয় করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা প্রদান;

(খ) এই অধ্যাদেশের অধীন তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয়;

(গ) এই অধ্যাদেশ বা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন বা অধ্যাদেশ দ্বারা ন্যস্ত পরিষদের দায়িত্ব সম্পাদন ও কর্তব্য পালনের জন্য ব্যয়;

(ঘ) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদনক্রমে পরিষদ কর্তৃক ঘোষিত তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয়;

(ঙ) সরকার কর্তৃক পরিষদের উপর ঘোষিত দায়যুক্ত ব্যয়।

(২) এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে উপজেলা পরিষদ যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবে সেইরূপ অর্থ ব্যয় করিবার ক্ষমতা উহার থাকিবে।

(৩) তহবিলের জমা খাতে উদ্বৃত্ত অর্থ, সরকার সময়ে সময়ে যেইরূপ নির্দেশ দিবেন, সেইরূপ খাতে ব্যয় হইবে।

(৪) পরিষদের সকল তহবিল চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হইবে।
  
 
  
   
  
তহবিল সংরক্ষণ বা বিনিয়োগ এবং বিশেষ তহবিল গঠন 
৪৩। (১) পরিষদের তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোন সরকারি ট্রেজারিতে বা সরকারি ট্রেজারির কার্য পরিচালনাকারী কোন ব্যাংকে বা সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে নির্ধারিত অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রাখিতে হইবে।

(২) পরিষদ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তহবিলের যে কোন অংশ বিনিয়োগ করিতে পারিবে।

(৩) পরিষদ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে পৃথক তহবিল গঠন করিতে পারিবে, যাহা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হইবে।
  
 
  
   
  
দায়যুক্ত ব্যয় 
৪৪। (১) তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয় নিম্নরূপ হইবে, যথা:-

(ক) পরিষদের চাকরিতে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে (প্রেষণে নিয়োগপ্রাপ্ত কিংবা নিজস্ব) বেতন ও ভাতা হিসেবে প্রদেয় অর্থ;

(খ) সরকার কর্তৃক নির্দেশিত পরিষদের নির্বাচন পরিচালনা, হিসাব নিরীক্ষা বা অন্য কোন বিষয়ের জন্য পরিষদ কর্তক প্রদেয় অর্থ;

(গ) কোন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক পরিষদের বিরুদ্ধে প্রদত্ত কোন রায়, ডিক্রী বা রোয়েদাদ কার্যকর করিবার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ; এবং

(ঘ) সরকার কর্তৃক দায়যুক্ত বলিয়া ঘোষিত অন্য যে কোন ব্যয়।

(২) পরিষদের তহবিলের উপর দায়যুক্ত কোন ব্যয়ের খাতে যদি কোন অর্থ অপরিশোধিত থাকে, তাহা হইলে যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের হেফাজতে উক্ত তহবিল থাকিবে সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে সরকার, আদেশ দ্বারা, উক্ত তহবিল হইতে যতদূর সম্ভব উক্ত অর্থ পরিশোধ করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
কমিশনের অর্থ বিষয়ক সুপারিশ বাস্তবায়ন 
৪৫। নিম্নবর্ণিত বিষয়ে কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত সুপারিশ বিবেচনা করিয়া, সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে, যথাঃ-

(ক) সরকারের বিভিন্ন উৎস হইতে প্রদত্ত কর বা ফিস ইত্যাদি প্রদানের হার বৃদ্ধি;

(খ) সরকারি কোষাগার হইতে উন্নয়নমূলক কার্যক্রমসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে আর্থিক অনুদান;

(গ) পরিষদের আয়ের উৎস ও পরিমাণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে গৃহীত ব্যবস্থা।
  
 
  
  নবম অধ্যায়
বাজেট ও হিসাব নিরীক্ষা
  
বাজেট 
৪৬। (১) প্রত্যেক উপজেলা পরিষদ প্রতি অর্থ বৎসর শুরু হইবার অন্তত ষাট দিন পূর্বে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত বৎসরের আয় ও ব্যয়ের বিবরণী সম্বলিত বাজেট প্রণয়ন করিয়া উহার অনুলিপি পরিষদের নোটিশ বোর্ডে অন্ততঃ পনের দিনব্যাপী জনসাধারণের অবগতি, মন্তব্য ও পরামর্শের জন্য প্রকাশ্য স্থানে রাখিবে।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী প্রণীত বাজেট সম্পর্কে জনগণের মন্তব্য ও পরামর্শ বিবেচনাক্রমে পরিষদ সংশ্লিষ্ট অর্থ বৎসর শুরু হইবার ত্রিশ দিন পূর্বে বাজেটটি অনুমোদন করিয়া উহার একটি অনুলিপি জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করিবে।

(৩) কোন অর্থ বৎসর শুরু হইবার পূর্বে পরিষদ উহার বাজেট অনুমোদন করিতে না পারিলে, জেলা প্রশাসক উক্ত বৎসরের জন্য একটি আয়-ব্যয় বিবরণী প্রস্তুত করাইয়া উহা প্রত্যয়ন করিবে এবং এইরূপ প্রত্যয়নকৃত বিবরণী পরিষদের অনুমোদিত বাজেট বলিয়া গণ্য হইবে।

(৪) উপ-ধারা (২) অনুযায়ী বাজেটের অনুলিপি প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসক বাজেটে পদ্ধতিগত কোন ত্রুটি থাকিলে তাহা সংশোধন করিয়া পরিষদকে অবহিত করিবে এবং অনুরূপ সংশোধিত বাজেটই পরিষদের অনুমোদিত বাজেট বলিয়া গণ্য হইবে।

(৫) কোন অর্থ বৎসর সমাপ্ত হইবার পূর্বে উক্ত অর্থ বৎসরের জন্য যে কোন সময়, প্রয়োজনে, পরিষদ সংশোধিত বাজেট প্রণয়ন ও অনুমোদন করিতে পারিবে এবং উক্ত সংশোধিত বাজেটের ক্ষেত্রেও এই ধারার বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
  
 
  
   
  
হিসাব 
৪৭। (১) উপজেলা পরিষদের আয় ও ব্যয়ের হিসাব বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফরমে সংরক্ষণ করিতে হইবে।

(২) প্রতি অর্থ বৎসর শেষে উপজেলা পরিষদ একটি বার্ষিক আয় ও ব্যয়ের হিসাব-বিবরণী প্রস্তুত করিবে ও উহা পরবর্তী অর্থ বৎসরের ষাট দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করিবে এবং জেলা প্রশাসক মতামতসহ সমন্বিত প্রতিবেদন নির্ধারিত ছকে সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে।

(৩) উপজেলা পরিষদ উপ-ধারা (২) এর অধীনে প্রস্তুতকৃত বার্ষিক আয় ও ব্যয়ের হিসাব-বিবরণীর একটি অনুলিপি সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উহার কার্যালয়ের কোন প্রকাশ্য স্থানে স্থাপন করিবে এবং উক্ত বিষয়ে জনসাধারণের নিকট হইতে প্রাপ্ত সকল আপত্তি ও পরামর্শ বিবেচনা করিবে।
  
 
  
   
  
নিরীক্ষক নিয়োগ 
৪৮। (১) উপজেলা পরিষদের তহবিলের হিসাবসমূহ সরকার যেইরূপ বিহিত করিবেন, সেই সময়ে ও স্থানে এবং নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত কোন নিরীক্ষক কর্তৃক পরীক্ষিত ও নিরীক্ষিত হইবে।

(২) এই ধারা অনুযায়ী নিযুক্ত নিরীক্ষক দণ্ড বিধি (Penal Code, 1860) এর ২১ ধারা মতে জনসেবক (Public Servant) বলিয়া গণ্য হইবেন।

(৩) নিরীক্ষক তহবিলের যে সকল হিসাব উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ জানাইবেন, পরিষদের চেয়ারম্যান, ক্ষেত্রমত, সেই সকল হিসাব নিরীক্ষকের নিকট উপস্থাপন করিবেন বা করাইবেন।
  
 
  
   
  
নিরীক্ষকের ক্ষমতা 
৪৯।(১) এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী নিরীক্ষার প্রয়োজনে কোন নিরীক্ষক -

(ক) নিরীক্ষা কার্য যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য যেরূপ আবশ্যক বলিয়া বিবেচনা করিবেন সেইরূপ কোন তথ্য তাহার সম্মুখে উপস্থাপন অথবা সরবরাহ করিবার জন্য লিখিত ভাবে অনুরোধ করিতে পারিবেন;

(খ) যে ব্যক্তি ঐরূপ কোন তথ্যাদির জন্য কৈফিয়ত দিতে দায়ী, অথবা যে ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে ঐরূপ কোন দলিল বা তথ্য থাকে, উপজেলা পরিষদের সদস্যগণের সহিত, দ্বারা বা পক্ষে কোন অংশ বা স্বার্থ, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, এবং তাহার স্বনামেই হউক বা তাহার অংশীদারের নামেই হউক, থাকে, সেইরূপ কোন ব্যক্তিকে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হইবার জন্য লিখিত অনুরোধ করিতে পারিবেন; এবং

(গ) ঐরূপ অবস্থার প্রেক্ষিতে তাহার সম্মুখে উপস্থাপিত কোন ব্যক্তিকে ঐরূপ কোন তথ্য সম্পর্কে একটি ঘোষণা প্রস্তুত করিয়া তাহা স্বাক্ষর করিবার জন্য, অথবা কোন প্রশ্নের উত্তর দিবার জন্য অথবা কোন বিবৃতি প্রস্তুত করিয়া তাহা দাখিল করিবার জন্য অনুরোধ করিতে পারিবেন।

(২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) অনুযায়ী নিরীক্ষক কর্তৃক প্রদত্ত অনুরোধ পালন করিতে অবহেলা করিলে বা অস্বীকৃতি জানাইলে নিরীক্ষক, যেকোন সময়, উক্ত বিষয়টি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককে অবহিত করিতে পারিবেন এবং জেলা প্রশাসক উক্ত ব্যক্তিকে যেইরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন সেইরূপ নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং উক্ত নির্দেশ ঐ ব্যক্তির জন্য অবশ্য পালনীয় হইবে।
  
 
  
   
  
নিরীক্ষা সংক্রান্ত বিধি প্রণয়ন 
৫০। সরকার, সরকার কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, নিরীক্ষা বিষয়ক ব্যবস্থাপনার বিধি প্রণয়ন করিবে, যাহাতে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথা:-

(ক) নিরীক্ষা প্রতিবেদন সংক্রান্ত সময়সীমা;

(খ) হিসাবপত্রের গুরুত্বপূর্ণ অসংগতি বা অনিয়ম;

(গ) অর্থ বা সম্পত্তির কোনরূপ ক্ষতি বা অপচয়;

(ঘ) নিরীক্ষা প্রতিবেদনের উপর ব্যবস্থা গ্রহণের সময়সীমাসহ অন্যান্য করণীয় বিষয়াবলী;

(ঙ) অবৈধভাবে অর্থ প্রদানকারী বা অর্থ প্রদান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট সুপারিশ;

(চ) হিসাব পত্রের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা;

(ছ) হিসাব পত্রের বিশেষ নিরীক্ষা।
  
 
  
  দশম অধ্যায়
পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী
  
পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী 
৫১। (১) প্রত্যেক উপজেলায় কর্মরত উপজেলা নির্বাহী অফিসার উক্ত উপজেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন।

(২) উপজেলা পরিষদের সচিব হিসাবে সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তাকে নিয়োগ প্রদান করিবে।

(৩) পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব ও কার্যাবালী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

(৪) উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে নিম্নলিখিত ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালন করিবেন, যথাঃ-

(ক) দাপ্তরিক দায়িত্ব হিসাবে পরিষদের এবং স্থায়ী কমিটির সভায় উপস্থিত থাকিয়া আলোচনায় অংশগ্রহণ করিবেন, তবে, ভোটাধিকার প্রয়োগ করিতে পারিবেন না;

(খ) পরিষদের আলোচ্যসূচিভুক্ত যে কোন বিষয়ে তাহার মতামত দিবেন এবং উক্তরূপ সুনিদিষ্ট মতামতসহ প্রত্যেকটি আলোচ্যসূচি পরিষদের সভায় উপস্থাপন করিতে হইবে;

(গ) পরিষদের সভায় গৃহীত কোন সিদ্ধান্ত সরকারের নিকট প্রেরণ করা প্রয়োজন মনে করিলে তাহা রেকর্ড করিবেন;

(ঘ) পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত কার্যকর করিবেন; তবে, তিনি যদি মনে করেন যে, সভার সিদ্ধান্ত আইনসংগতভাবে গৃহীত হয়নি এবং উক্ত সিদ্ধান্ত বা সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়িত হইলে মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য এবং জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হইবে, তাহা হইলে তিনি পরিষদকে উহা পুনর্বিবেচনার জন্য লিখিত অনুরোধ করিবেন; পরিষদ উহার পূর্বের সিদ্ধান্ত বহাল রাখিলে তিনি বিষয়টি চেয়ারম্যানকে অবহিত করিয়া সরকার বা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিবেন এবং পনের দিনের মধ্যে সরকার বা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের কোন সিদ্ধান্ত পাওয়া না গেলে সরকার বা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষকে অবহিত রাখিয়া সিদ্ধান্তটি বা সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন;

(ঙ) চেয়ারম্যানের সাধারণ তদারকি ও নিয়ন্ত্রণে পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণ করিবেন;

(চ) এই অধ্যাদেশের অধীন প্রণীত বিধি দ্বারা প্রদত্ত দায়িত্ব পালন ও ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন;

(ছ) পরিষদ অথবা চেয়ারম্যান কর্তৃক নিরূপিত ব্যয় নির্বাহ করিবেন;

(জ) পরিষদের আয় ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করিবেন;

(ঝ) পরিষদের সভা এবং সভার কার্যবিবরণী রেকর্ড করিবেন;

(ঞ) পরিষদের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শৃংখলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন;

(ট) পরিষদের নিকট পরবর্তী মাসের প্রথম দশ দিনের মধ্যে অথবা পরবর্তী মাসের সভায়, যাহা আগে হইবে, মাসিক হিসাব বিবরণী উপস্থাপন করিবেন;

(ঠ) ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরিষদের নিকট বিগত অর্থ বছরের বার্ষিক হিসাব উপস্থাপন করিবেন;

(ড) সরকার, কমিশন বা অডিট কর্তৃপক্ষের নিকট চাহিদা অনুযায়ী আয়-ব্যয়ের হিসাব বিবরণী সরবরাহ করিবেন;

(ঢ) পরিষদের অধীনস্ত কোন প্রতিষ্ঠানের (যদি থাকে) আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করিবেন;

(ণ) পরিষদের স্থায়ী কমিটি এবং এই অধ্যাদেশের অধীন গঠিত অন্যান্য কমিটির রেকর্ড-পত্র সংরক্ষণ করিবেন;

(ত) সরকার বা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বার্ষিক এবং পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন কার্যক্রম সমন্বয় করিবেন;

(থ) সরকার এবং কমিশন কর্তৃক আদিষ্ট হইলে পরিষদের তহবিল ব্যবহার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করিবেন।

(৫) উপজেলা পরিষদের অন্যান্য কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের ক্ষেত্রে পরিষদে ইতিপূর্বে বলবৎ জনবল কাঠামো সরকার কর্তৃক পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকিবে এবং তাহারা পূর্বের ন্যয় কাজ করিবে।
  
 
  
   
  
সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিষদে ন্যস্তকরণে সরকারের ক্ষমতা 
৫২। (১) নির্ধারিত শর্তে পরিষদের সাধারণ বা বিশেষ কার্য সম্পাদনের লক্ষ্যে সরকার তৃতীয় তফসিলে বর্ণিত সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী এবং তাহাদের কার্যাবলী নির্ধারিত সময়ের জন্য পরিষদে ন্যস্ত করিতে পারিবে এবং উক্তরূপে স্থানান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ সংশ্লিষ্ট পরিষদের তত্ত্বাবধানে ও সাধারণ নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, প্রয়োজনে, যে কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কর্মকর্তা বা কর্মচারী ও তাহাদের কার্যাবলী পরিষদের অধীনে ন্যস্ত করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন হস্তান্তরিত বা ন্যস্তকৃত কোন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ সমীচীন মনে করিলে পরিষদ এই বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান করিয়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন প্রেরণ করিবে।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিষদে স্থানান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ তাহাদের উপর অর্পিত সাধারণ দায়িত্ব ছাড়াও পরিষদের কর্মকর্তা বা কর্মচারীর ন্যায় পরিষদ কর্তৃক সময়ে সময়ে নির্ধারিত অন্যান্য দায়িত্বও পালন করিবেন।

(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন স্থানান্তরিত বা ন্যস্তকৃত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ পরিষদের নিকট এই অধ্যাদেশ বা বিধি অনুযায়ী স্থানান্তরিত নহে এইরূপ সরকারি প্রকল্প, স্কীম, পরিকল্পনা ইত্যাদি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করিবেন ।

(৫) সংশ্লিষ্ট পরিষদ কর্তৃক ব্যয়ভার বহনের ক্ষমতা অর্জন না করা পর্যন্ত উপ-ধারা (১) এর অধীন স্থানান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা সরকার কর্তৃক প্রদেয় হইবে।

(৬) উপ-ধারা (১) এর অধীন স্থানান্তরিত বা ন্যস্তকৃত কর্মকর্তাদের বার্ষিক কার্যক্রম প্রতিবেদন (Annual Performance Report) পরিষদ কর্তৃক এবং তাহাদের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্তৃক লেখা হইবে।
  
 
  
   
  
পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধি ও কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের সম্পর্ক 
৫৩। (১) পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের আইনগত অধিকার ও পেশাগত স্বাধীনতা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে সরকার, কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন বা পরিষদে ন্যস্তকৃত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ বিষয়ক একটি আচরণ বিধি প্রণয়ন করিবে।

(২) পরিষদের যে কোন সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাদের মতামত সভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ থাকিতে হইবে।

(৩) কমিশন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের আচরণ বিধি বহির্ভূত যে কোন অভিযোগ বিবেচনা করিবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ করিবে।

(৪) পরিষদ নির্বাচিত কোন জনপ্রতিনিধি কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কোন কার্য সম্পাদনের জন্য মৌখিক নির্দেশনা প্রদান করিলেও সংশ্লিষ্ট কাজটি বাস্তবায়নের পূর্বে লিখিতভাবে জানাইতে হইবে।
  
 
  
  একাদশ অধ্যায়
পরিষদের করারোপ
  
পরিষদ কর্তৃক করারোপ 
৫৪। (১) উপজেলা পরিষদ, চতুর্থ তফসিলে উলি্লখিত সকল অথবা যে কোন কর, রেইট, টোল, ফিস, ইত্যাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আরোপ করিতে পারিবে।

(২) পরিষদ কর্তৃক আরোপিত সকল কর, রেইট, টোল, ফিস, ইত্যাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপিত হইবে এবং সরকার ভিন্নরূপ নির্দেশ না দিলে উক্ত আরোপের বিষয়টি আরোপের পূর্বে প্রকাশ করিতে হইবে।

(৩) কোন কর, রেইট, টোল, বা ফিস আরোপের বা উহার পরিবর্তনের কোন প্রস্তাব অনুমোদিত হইলে অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ হইতে উহা কার্যকর হইবে।
  
 
  
   
  
আদর্শ কর তফসিল 
৫৫। সরকার, কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, উপজেলা পরিষদের জন্য আদর্শ কর তফসিল প্রণয়ন করিবে এবং পরিষদ, কর, রেইট, টোল বা ফিস আরোপের ক্ষেত্রে উক্তরূপ প্রণীত আদর্শ কর তফসিল নমুনা হিসাবে অনুসরণ করিবে।
  
 
  
   
  
কর সংক্রান্ত দায় 
৫৬। কোন ব্যক্তি বা জিনিসপত্রের উপর কর, রেইট, টোল বা ফিস আরোপ করা যাইবে কিনা উহা নির্ধারণের প্রয়োজনে পরিষদ নোটিশের মাধ্যমে, যে কোন ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করিতে বা এতদ্সংক্রান্ত দলিলপত্র হিসাব বহি বা জিনিসপত্র দাখিল করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
কর সংগ্রহ ও আদায়, ইত্যাদি 
৫৭। (১) এই অধ্যাদেশের অধীন আরোপিত সকল কর, রেইট, টোল এবং ফিস নির্ধারিত ব্যক্তি কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংগ্রহ করিতে হইবে।

(২) এই অধ্যাদেশের অধীন পরিষদ কর্তৃক দাবিযোগ্য সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য অর্থ সরকারি দাবি হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে।

(৩) এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত পরিষদের যেকোন সদস্য বা কর্মকর্তা নির্ধারিত পদ্ধতিতে বকেয়া কোন কর, রেইট, টোল বা ফিস আদায়ের জন্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত ও নিষ্পত্তি করিতে পারিবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর বিধান সত্ত্বেও, সরকার কোন পরিষদকে এই অধ্যাদেশের অধীন প্রাপ্য সকল অনাদায়ী কর, রেইট, টোল ফিস বা অন্যান্য বকেয়া অর্থ আদায় করিবার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মলিকানাধীন স্থাবর বা অস্থাবর সমপত্তি ক্রোক এবং বিক্রয় করিবার ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে।

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন ক্ষমতা কোন্ কর্মকর্তা বা কোন্ শ্রেণীর কর্মকর্তা কি প্রকারে প্রয়োগ করিবেন তাহা সরকার বিধি দ্বারা নির্ধারণ করিবে।
  
 
  
   
  
কর নির্ধারণ, মূল্যায়ন, ইত্যাদির বিরুদ্ধে আপত্তি 
৫৮। এই অধ্যাদেশের অধীন ধার্য কোন কর, রেইট, টোল বা ফিস বা এতদ্সংক্রান্ত কোন সম্পত্তির মূল্যায়ন অথবা কোন ব্যক্তি কর্তৃক উহা প্রদানের দায়িত্ব সম্পর্কে কোন আপত্তি লিখিত দরখাস্তের মাধ্যমে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট এবং নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে উত্থাপন করিতে হইবে।
  
 
  
   
  
কর বিধি 
৫৯। (১) পরিষদ কর্তৃক আরোপিত সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য দাবি বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ধার্য, আরোপ, ইত্যাদি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করা যাইবে।

(২) এই ধারায় উল্লিখিত বিষয় সম্পর্কিত বিধিতে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে কর দাতাদের করণীয় এবং কর ধার্যকারী ও আদায়কারী কর্মকর্তা ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে বিধান থাকিবে।
  
 
  
  দ্বাদশ অধ্যায়
সরকার ও কমিশনের ক্ষমতা
  
পরিষদের রেকডর্, ইত্যাদি পরিদর্শনের ক্ষমতা 
৬০। (১) সরকার বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতা প্রদত্ত যে কোন কর্মকর্তা পরিষদকে নিম্নরূপ নির্দেশ দিতে পারিবে, যথা:-

(ক) পরিষদের হেফাজতে বা নিয়ন্ত্রণাধীন যে কোন রেকর্ড, রেজিস্টার বা অন্যান্য নথিপত্র উপস্থাপনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, প্রয়োজনে এই সকল রেকর্ড, রেজিস্টার বা নথিপত্রের ফটোকপি রাখিয়া মূল কপি নব্বই দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পরিষদে ফেরত দিতে হইবে;

(খ) যে কোন রিটার্ন, প্ল্যান, প্রাক্কলন, আয়-ব্যয় বিবরণী ইত্যাদি দাখিল;

(গ) পরিষদ সংশ্লিষ্ট যে কোন তথ্য বা প্রতিবেদন সরবরাহ;

(ঘ) পরিষদের আয়ের উৎস হিসাবে কোন দাবি পরিত্যাগ বা কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করিয়া দেওয়ার পূর্বে সরকারের পূর্বানুমতি গ্রহণ।

(২) সরকার বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতা প্রদত্ত যে কোন কর্মকর্তা যে কোন পরিষদ এবং পরিষদের নথিপত্র, স্থাবর- অস্থাবর সম্পত্তি, সমাপ্ত ও চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসহ যে কোন নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করিতে পারিবে।

(৩) উপজেলা পরিষদ, পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ উপ-ধারা (১) অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করিতে বাধ্য থাকিবেন।

(৪) সরকার নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময় পর পর প্রত্যেক পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম সংক্রান্ত পারফরমেন্স অডিট সম্পন্ন করিবে।
  
 
  
   
  
কারিগরি তদারকি ও পরিদর্শন 
৬১। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে কোন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং তৎকর্তৃক মনোনীত কারিগরি কর্মকর্তাগণ পরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন উক্ত বিভাগের উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ড ও নথিপত্র পরিদর্শন করিতে পারিবেন।
  
 
  
   
  
সরকার বা কমিশনের দিকনির্দেশনা প্রদান এবং তদন্ত করিবার ক্ষমতা 
৬২। (১) এই অধ্যাদেশে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার কমিশনের মতামত গ্রহণ করিয়া সরকারের নীতি-কৌশলের সাথে সঙ্গতি রাখিয়া যে কোন পরিষদকে আর্থিক ব্যবস্থাপনা, কর্মকর্তা বা কর্মচারী ব্যবস্থাপনা, বিভিন্ন প্রকার প্রকল্প প্রণয়ন ও প্রকল্পের উপকারভোগী নির্বাচন, পরিষদ বিভিন্ন সভার কার্যক্রম পরিচালনা, ইত্যাদি বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে, এবং পরিষদ উক্তরূপ দিকনির্দেশনা বাধ্যতামূলকভাবে অনুসরণ করিবে।

(২) কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন বা কোনরূপ আর্থিক অনিয়ম বা পরিষদের অন্য কোন অনিয়মের বিষয়ে প্রাপ্ত অভিযোগ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত এক বা একাধিক কর্মকর্তা তদন্ত করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট পরিষদ উক্ত তদন্ত কাজ পরিচালনায় সহযোগিতা করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) অনুযায়ী তদন্ত সম্পাদনের পর তদন্তের ফলাফলের উপর ভিত্তি করিয়া সরকার, এই অধ্যাদেশের বিধান সাপেক্ষে, দায়ী ব্যক্তি, কর্মকর্তা, কর্মচারী বা পরিষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
পরিষদ, পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সদস্য ও দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ 
৬৩। (১) যদি সরকারের নিকট এই মর্মে প্রতীয়মান হয় যে, কোন পরিষদ বা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সদস্য ও দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা এই অধ্যাদেশ বা সরকারের অন্য কোন আদেশ দ্বারা নির্ধারিত দায়িত্ব সমপাদনে ব্যর্থ হইয়াছে, তাহা হইলে সরকার অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ লিখিত আদেশ দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্তরূপ দায়িত্ব পালনের জন্য পরিষদ বা চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দায়িত্ব সম্পাদনে বা আদেশ পালনে ব্যর্থ হইলে সরকার সংশ্লিষ্টদের যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান করিয়া, কারণ দর্শাইবেন ও উক্তরূপ দায়িত্ব সম্পাদন বা আদেশ পালনের জন্য যে কোন কর্মকর্তা বা কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব পালনার্থে নিয়োগ করিবেন এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট আর্থিক সংশ্লেষ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পরিষদের তহবিল বা সংশ্লিষ্টদের ব্যক্তিগত তহবিল হইতে বহনের নির্দেশ প্রদান করিবেন।
  
 
  
   
  
পরিষদের সিদ্ধান্ত, কার্যবিবরণী, ইত্যাদি বাতিল বা স্থগিতকরণ 
৬৪। (১) সরকার স্বয়ং অথবা পরিষদের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা অন্য কোন ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিষদের যে কোন কার্যবিবরণী বা সিদ্ধান্ত বাতিল বা স্থগিত করিতে পারিবে, যদি উক্তরূপ সিদ্ধান্ত বা কার্যবিবরণী-

(ক) আইনসংগতভাবে গৃহীত না হইয়া থাকে;

(খ) এই অধ্যাদেশ বা অন্য কোন আইনের পরিপন্থী বা অপব্যবহারমূলক হইয়া থাকে;

(গ) মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য, জননিরাপত্তা এবং সামপ্রদায়িক সম্প্রীতি হুমকির সম্মুখীন করে অথবা দাঙ্গা বা ঝগড়া-বিবাদের সম্ভাবনা সৃষ্টি করে;

(ঘ) সরকার কর্তৃক জারিকৃত দিকনির্দেশনামূলক সিদ্ধান্তের পরিপন্থী হয়।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী কোন সিদ্ধান্ত বা কার্যবিবরনী বাতিল বা স্থগিত করিবার পূর্বে সরকার বিষয়টি কমিশনের নিকট প্রেরণ করিবে এবং কমিশন সংশ্লিষ্ট পরিষদকে যথাযথ শুনানির সুযোগ দিয়া সরকারের নিকট মতামতসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করিবে এবং সরকার উক্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট পরিষদের কার্যবিবরনী বা সিদ্ধান্ত বাতিল বা সংশোধন বা চূড়ান্ত করিবে।

(৩) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী পরিষদের কোন সিদ্ধান্ত বা কার্যবিবরণী বাতিল বা সংশোধন করা প্রয়োজন মনে করিলে, সরকার সাময়িকভাবে উক্ত কার্যবিবরণীর সিদ্ধান্ত স্থগিত করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
পরিষদের বার্ষিক, আর্থিক ও প্রশাসনিক প্রতিবেদন 
৬৫। (১) পরিষদ প্রত্যেক বৎসর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে উহার বার্ষিক, আর্থিক ও প্রশাসনিক প্রতিবেদন প্রস্তত করিবে এবং পরবর্তী বৎসরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উহা সরকার এবং কমিশনের নিকট প্রেরণ করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করিতে না পারিলে সরকার পরিষদের অনুকূলে অনুদান প্রদান স্থগিত রাখিতে পারিবে।

(৩) পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শক্রমে উক্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করিবেন এবং উহা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পরিষদের সভায় উপস্থাপন করিবেন।

(৪) উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং জেলা প্রশাসক সমন্বিত প্রতিবেদন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ছকে সরকার ও কমিশনের নিকট প্রেরণ করিবেন।

(৫) সরকার উপ-ধারা (৩) অনুসারে প্রাপ্ত সমন্বিত বার্ষিক প্রতিবেদন সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে উপস্থাপন করিবে।
  
 
  
   
  
পরিষদ বাতিল ও পুনঃনির্বাচন 
৬৬। (১) সরকার, কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, নিম্নলিখিত কারণে যথাযথ তদন্তপূর্বক সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা পরিষদ বাতিল করিতে পারিবে, যথাঃ-

(ক) কোন উপজেলা পরিষদ চলতি অর্থ বৎসর শেষ হওয়ার পূর্বে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরবর্তী বৎসরের বাজেট পাশ করিতে ব্যর্থ হইলে; অথবা

(খ) পরিষদের অধিকাংশ নির্বাচিত সদস্য পদত্যাগ করিলে; অথবা

(গ) পরিষদের অধিকাংশ সদস্য অযোগ্য হইয়া পড়িলে; অথবা

(ঘ) পরিষদ ক্ষমতার অপব্যবহার করিলে; অথবা

(ঙ) সরকারের বিবেচনায় পরিষদ এই অধ্যাদেশ ও অন্যান্য আইন বা বিধি এবং সরকারের সার্কুলার, পরিপত্র, ইত্যাদির মাধ্যমে অর্পিত দায়িত্ব পালনে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হইলেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, পরিষদ বাতিল করিবার পূর্বে পরিষদকে যুক্তিসংগতভাবে শুনানির সুযোগ দিতে হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী পরিষদ বাতিলের আদেশ প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ হইতে কার্যকর হইবে এবং গেজেট প্রজ্ঞাপনের কপি নির্বাচন কমিশন ও কমিশনে প্রেরণ করিতে হইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ হইতে পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সকল সদস্যের আসন শূন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত আসন শূন্য হইবার একশত আশি দিনের মধ্যে পুনঃনির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরিষদ পুর্নগঠিত হইবে।

(৪) পুনর্গঠিত পরিষদের সদস্যগণ পরিষদের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হইবেন এবং দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৫) পরিষদ বাতিল হইবার এবং পুনর্গঠিত হইবার অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত একটি প্রশাসনিক কমিটি পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করিবে।

(৬) পরিষদের সকল সম্পদ ও দায় উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী পুনর্গঠিত পরিষদের উপর দায়িত্ব গ্রহণের পর হইতে পরিষদের অবশিষ্ট মেয়াদকাল পর্যন্ত এবং উপ-ধারা (৫) অনুযায়ী গঠিত প্রশাসনিক কমিটির উপর দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ হইতে পরিষদ পুনর্গঠন হওয়া পর্যন্ত বর্তাইবে।
  
 
  
   
  
পরিষদের উপর তত্ত্বাবধান 
৬৭। এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যের সহিত পরিষদের কার্যকলাপের সামঞ্জস্য সাধনের নিশ্চয়তা বিধানকল্পে সরকার পরিষদের উপর সাধারণ তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রয়োগ করিবে।
  
 
  
  ত্রয়োদশ অধ্যায়
তথ্য প্রাপ্তির অধিকার
  
তথ্য প্রাপ্তির অধিকার 
৬৮। (১) প্রচলিত আইনের বিধান সাপেক্ষে বাংলাদেশের যে কোন নাগরিকের পরিষদ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রাপ্তির অধিকার থাকিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার জনস্বার্থে এবং স্থানীয় প্রশাসনিক নিরাপত্তার স্বার্থে গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে কোন রেকর্ড বা নথিপত্র নোটিফাইড রেকর্ড হিসাবে বিশেষ শ্রেণীভুক্ত করিতে পারিবে এবং কোন ব্যক্তির উক্তরূপ বিশেষ শ্রেণীভুক্ত রেকর্ড ও নথিপত্রের তথ্যাদি জানিবার অধিকার থাকিবে না এবং পরিষদ এই সংক্রান্ত যে কোন আবেদন অগ্রাহ্য করিতে পারিবে।

(৩) সরকার, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, এলাকার জনসাধারণের নিকট সরবরাহযোগ্য তথ্যাদির একটি তালিকা প্রকাশের জন্য পরিষদকে আদেশ দিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
তথ্য সরবরাহের পদ্ধতি 
৬৯। (১) কোন ব্যক্তির কোন তথ্যের প্রয়োজন হইলে তাহাকে নির্ধারিত ফরমে এবং নির্ধারিত ফি দিয়া পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিবের নিকট লিখিত আবেদন করিতে হইবে এবং উক্ত দরখাস্ত নামঞ্জুর বা অন্যরূপে নিষ্পত্তি না হইলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চাহিত তথ্যাদি সরবরাহ করিবেন।

(২) কোন ব্যক্তির আবেদন নামঞ্জুর হইলে উক্ত নামঞ্জুরের কারণ তাহাকে লিখিতভাবে জানাইতে হইবে।
  
 
  
   
  
তথ্য প্রদান স্থগিত রাখিবার শাস্তি 
৭০। (১) পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী এই অধ্যায়ে বর্ণিত নোটিফাইড রেকর্ডপত্র ব্যতীত অন্যান্য তথ্যাদি নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।

(২) যদি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে উক্তরূপ তথ্যাদি সরবরাহ না করেন, তাহা হইলে প্রতিদিনের বিলম্বের জন্য ৫০ (পঞ্চাশ) টাকা করিয়া জরিমানা দিতে হইবে এবং উক্ত জরিমানার অর্থ পরিষদের তহবিলে জমা হইবে।

(৩) পরিষদের সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী যদি তথ্য সরবরাহ না করেন, অথবা যদি তাহার জানা সত্ত্বেও অসত্য বা ভুল তথ্য সরবরাহ করেন, তাহা হইলে তিনি অন্যূন এক হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
  
 
  
   
  
সরল বিশ্বাসে কৃতকর্ম 
৭১। এই অধ্যায়ে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারী এই মর্মে নিশ্চিত হন যে, চাহিত তথ্যাদি সরবরাহ করিবার জন্য সংশ্লিষ্ট নথি বা রেকর্ডপত্র খুঁজিয়া পাওয়া যাইতেছে না অথবা এই ধরনের তথ্যাদি পরিষদে সংরক্ষিত নাই, তাহা হইলে উক্ত বিষয়টি আবেদনকারীকে যথাশীঘ্র্র সম্ভব জানাইয়া দিতে হইবে এবং এই ধারায় বর্ণিত কারণে তথ্য সরবরাহ না করিতে পারিলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিব বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারী বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না।
  
 
  
  চতুর্দশ অধ্যায়
অন্যান্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, অপরাধ, দণ্ড, ইত্যাদি
  
যৌথ কমিটি 
৭২। কোন অভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কোন পরিষদ অন্য যে কোন পরিষদ অথবা পরিষদসমূহের সহিত বা কোন পৌরসভা অথবা পৌরসভাসমূহের সহিত অথবা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অথবা কর্তৃপক্ষসমূহের সহিত যৌথ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যৌথ কমিটি গঠন করিতে পারিবে এবং কমিটির কার্য পরিচালনার জন্য প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতাসহ যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা অর্পণ করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
পরিষদ ও অন্যান্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিরোধ 
৭৩। যদি দুই বা ততোধিক পরিষদ অথবা কোন পরিষদ এবং কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়, তাহা হইলে বিষয়টি মীমাংসার জন্য-

(ক) সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ একই বিভাগে হইলে বিভাগীয় কমিশনারের নিকট পাঠাইতে হইবে; এবং

(খ) সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের হইলে অথবা একটি পক্ষ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হইলে সরকারের নিকট পাঠাইতে হইবে; এবং, ক্ষেত্রমত, বিভাগীয় কমিশনার অথবা সরকারের সিদ্ধান্ত ই চূড়ান্ত হইবে।
  
 
  
   
  
অপরাধ 
৭৪। পঞ্চম তফসিলে বর্ণিত অপরাধসমূহ এই অধ্যাদেশের অধীনে দণ্ডনীয় অপরাধ হইবে।
  
 
  
   
  
দণ্ড 
৭৫। এই অধ্যাদেশের অধীন কোন অপরাধের জন্য অনধিক দুই হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড প্রদান করা যাইবে, এবং উক্ত অপরাধ যদি অনবরতভাবে ঘটিতে থাকে, তাহা হইলে প্রথমবার অপরাধ সংঘটনের পর উক্ত অপরাধের সাথে পুনরায় জড়িত থাকিবার সময়কালে প্রতিদিনের জন্য অনধিক দুইশত টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড প্রদান করা যাইবে।
  
 
  
   
  
অপরাধের আপোষ রফা 
৭৬। চেয়ারম্যান অথবা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সাধারণভাবে অথবা বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি এই অধ্যাদেশের অধীন কোন অপরাধের আপোষ মীমাংসা করিতে পারিবেন।
  
 
  
   
  
অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ 
৭৭। পরিষদ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ ব্যতীত কোন আদালত, এই অধ্যাদেশের অধীন কোন অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ করিতে পারিবে না।
  
 
  
   
  
পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য 
৭৮। প্রত্যেক পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য হইবে -

(ক) এই অধ্যাদেশে বর্ণিত কোন অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা বা অপরাধ সংঘটনের খবর সমপর্কে অনতিবিলম্বে পরিষদের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তাকে অবহিত করা;

(খ) পরিষদের চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তার লিখিত অনুরোধের ভিত্তিতে আইনসঙ্গত দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা।
  
 
  
  পঞ্চদশ অধ্যায়
বিবিধ
  
সীমানা লংঘন 
৭৯। (১) কোন ব্যক্তি পরিষদের জায়গা, সড়ক অথবা নর্দমার উপর অথবা ভিতরে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে অন্যায় দখল করিতে পারিবেন না।

(২) পরিষদ নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে, উল্লিখিত সীমানা লংঘনকারী ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উল্লিখিত স্থানসমূহ হইতে তাহার সম্পদ বা সম্পত্তি অপসারণ করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাহা অপসারণ করা না হইলে পরিষদ স্বীয় উদ্যোগে তাহা অপসারণের ব্যবস্থা করিবে এবং এই বাবদ খরচের অর্থ এই অধ্যাদেশ অনুসারে সীমানা লংঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তির উপর পরিষদের পাওনা হিসাবে ধার্য হইবে।

(৩) অন্য কোন আইনে যাহাই থাকুক না কেন, এই ধারা অনুসারে অপসারিত অথবা অপসারণযোগ্য কোন অন্যায় দমনের জন্য কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হইবে না।
  
 
  
   
  
আপিল আদেশ 
৮০। এই অধ্যাদেশ, বিধি বা প্রবিধান অনুসারে প্রদত্ত পরিষদ, উহার চেয়ারম্যান বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কোন আদেশ দ্বারা সংক্ষুদ্ধ কোন ব্যক্তি নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল করিতে পারিবেন; এবং এই আপিলের উপর নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে এবং ইহার বিরুদ্ধে কোন আদালতে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।
  
 
  
   
  
স্থায়ী আদেশ 
৮১। সময় সময় জারিকৃত স্থায়ী আদেশ দ্বারা, সরকার-

(ক) পরিষদের সহিত অন্যান্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সম্পর্ক নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে;

(খ) পরিষদ এবং সরকারি কর্তৃপক্ষের কার্যাবলীর মধ্যে কাজের সমন্বয় সাধন করিতে পারিবে;

(গ) পরিষদকে আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ, বিশেষ শর্তে, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে, মঞ্জুরী প্রদান করিতে পারিবে;

(ঘ) এক পরিষদ কর্তৃক অন্য পরিষদকে চাঁদা প্রদানের ব্যবস্থা করিতে পারিবে; এবং

(ঙ) এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরিষদকে সাধারণ নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা 
৮২। (১) এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে -

(ক) সরকার, কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, দফা (খ) এর বিধান সাপেক্ষে সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে;

(খ) নির্বাচন কমিশন চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্যের নির্বাচন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের আচরণ, নির্বাচন বিরোধ, নির্বাচন সক্রান্ত অপরাধ, উক্তরূপ অপরাধের দণ্ড, প্রয়োগ এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, সরকার নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহের যে কোন বিষয়ে বা সকল বিষয়ে এবং যে সকল বিষয় প্রাসঙ্গিক ও পরিপূরক সেই সকল বিষয়ে প্রয়োজনীয বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা:-

(ক) চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের ক্ষমতা ও কার্যাবলী;

(খ) সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের ক্ষমতা ও বিশেষ কার্যাবলী;

(গ) পরিষদের পক্ষে চুক্তি সম্পাদন;

(ঘ) পরিষদ কর্তৃক যে সকল রেকর্ড, প্রতিবেদন রক্ষণাবেক্ষণ, প্রস্তুত বা প্রকাশ করা হইবে তাহা নির্ধারণ;

(ঙ) পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের নিয়োগ ও চাকুরির শর্তাবলী;

(চ) তহবিল ও বিশেষ তহবিলসমূহের ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, তত্ত্বাবধান ও বিনিয়োগ;

(ছ) বাজেট প্রণয়ন ও অনুমোদন এবং এতদ্সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়;

(জ) হিসাব রক্ষণ এবং নিরীক্ষা;

(ঝ) পরিষদের সমপত্তির ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও হস্তান্তর;

(ঞ) উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন, নিয়ন্ত্রণ, সমন্বিতকরণ, অনুমোদন ও বাস্তবায়ন;

(ট) পরিষদের অর্থের বা সম্পত্তির ক্ষতিসাধন, বা বিনষ্টিকরণ বা ক্ষমতার অপপ্রয়োগের জন্য পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং অন্য কোন ব্যক্তির দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করিবার পদ্ধতি;

(ঠ) কর, রেইট, টোল এবং ফিস ধার্য, আদায় ও নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়;

(ড) পরিষদের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ পদ্ধতি; এবং

(ঢ) পরিষদ পরিদর্শনের পদ্ধতি এবং পরিদর্শকের ক্ষমতা।
  
 
  
   
  
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা 
৮৩। (১) এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরিষদ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, এবং সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই অধ্যাদেশের বা বিধির সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ নহে এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।

(২) বিশেষ করিয়া এবং পূর্ববর্তী ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, অনুরূপ প্রবিধানে নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোন বিষয়ে প্রবিধান প্রণয়ন করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) পরিষদের কার্যাবলী পরিচালনা;

(খ) সভার কোরাম নির্ধারণ;

(গ) প্রশ্ন উপস্থাপন;

(ঘ) সভা আহবান;

(ঙ) সভার কার্যবিবরণী লিখন;

(চ) সভায় গৃহীত প্রস্তাব বাস্তবায়ন;

(ছ) স্থায়ী কমিটির বিষয়াদি ও কার্যাবলী পরিচালনা;

(জ) সাধারণ সীলমোহর হেফাজত ও ব্যবহার;

(ঝ) কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে পরিষদের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা অর্পণ;

(ঞ) পরিষদের অফিসের বিভাগ ও শাখা গঠন এবং সকল কাজের পরিধি নির্ধারণ;

(ট) গবাদি পশু ও অন্যান্য প্রাণীর বিক্রয় রেজিস্ট্রিকরণ;

(ঠ) সাধারণের ব্যবহার্য সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ;

(ড) শ্মশান ও কবরস্থান নিয়ন্ত্রণ;

(ঢ) সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ;

(ণ) অবৈধ দখল রোধকরণ;

(ত) গবাদি পশুর খোয়াড় ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ;

(থ) এই অধ্যাদেশের অধীন প্রবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রণযোগ্য অন্য যেকোন বিষয়;

(দ) শিক্ষা সফর, পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি উপলক্ষে সরকারি বা বেসরকারিভাবে বিদেশ ভ্রমণ।
  
 
  
   
  
বিধি ও প্রবিধান সংক্রান্ত সাধারণ বিধান, ইত্যাদি 
৮৪। (১) পরিষদ সমপর্কিত বিধি ও প্রবিধানের কপি পরিষদ অফিসে পরিদর্শন ও বিক্রয়ের জন্য রাখিতে হইবে।

(২) সরকার নমুনা প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং এইরূপ কোন নমুনা প্রবিধান প্রণীত হইলে পরিষদ প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে উক্ত নমুনা অনুসরণ করিবে।
  
 
  
   
  
নির্ধারিত কতিপয় বিষয় 
৮৫। এই অধ্যাদেশের অধীন কোন কাজ করিবার জন্য নির্ধারিত থাকা সত্ত্বেও যদি কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বা কোন পদ্ধতিতে তাহা করা হইবে তৎসমপর্কে কোন বিধান না থাকে তাহা হইলে উক্ত কাজ সরকার কর্তৃক নির্দেশিত কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতিতে সমপন্ন করিবে।
  
 
  
   
  
অসুবিধা দূরীকরণ 
৮৬। এই অধ্যাদেশের বিধানাবলী কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, উক্ত অসুবিধা দূরীকরণার্থ, আদেশ দ্বারা, প্রয়োজনীয় যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
ক্ষমতা অর্পণ 
৮৭। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই অধ্যাদেশে বা বিধিসমূহে বর্ণিত, যে কোন ক্ষমতা বিভাগীয় কমিশনার বা তাহার অধীনস্থ কোন কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবে।

(২) বিভাগীয় কমিশনার, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, তাহার উপর অর্পিত যে কোন ক্ষমতা তাহার অধীনস্থ অন্য কোন কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
লাইসেন্স ও অনুমোদন 
৮৮। (১) এই অধ্যাদেশ অথবা বিধি অথবা প্রবিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন কাজ সম্পাদন করিবার জন্য পরিষদের অনুমতি বা অনুমোদনের প্রয়োজন হইলে, উক্ত অনুমতি বা অনুমোদন লিখিত আকারে প্রদান করিতে হইবে।

(২) পরিষদ কর্তৃক অথবা পরিষদের কর্তৃত্বের অধীন প্রদত্ত সকল লাইসেন্স অনুমোদন বা অনুমতি চেয়ারম্যান কর্তৃক অথবা চেয়ারম্যানের অনুমোদনক্রমে বিধি ও প্রবিধান দ্বারা পরিষদের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইতে হইবে।
  
 
  
   
  
পরিষদের বিরুদ্ধে মোকদ্দমা দায়ের 
৮৯। সরকারিভাবে দায়িত্ব পালনকালে কোন পরিষদ কিংবা কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারী দ্বারা কৃত কোন কাজ, বা কাজ করা হইয়াছে বলিয়া মনে হইলে, সে সমপর্কে লিখিতভাবে নোটিশ প্রদানের পর একমাস অতিবাহিত না হইলে তাহার বিরুদ্ধে কোন মোকদ্দমা দায়ের করা যাইবে না এবং এই ক্ষেত্রে পরিষদের নিকট লিখিত নোটিশ অফিসে বিলি করিতে বা পোঁছাইতে হইবে এবং কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীর ক্ষেত্রে লিখিত নোটিশ তাহার নিকট পোঁছাইতে হইবে কিংবা তাহার অফিসে বা আবাসিক ঠিকানায় পোঁছাইতে হইবে এবং নোটিশে ফরিয়াদী হইতে ইচ্ছুক ব্যক্তি তাহার এহেন পদক্ষেপের কারণ, নিজ নাম ও আবাসিক ঠিকানা উল্লেখ করিবেন; এবং মোকদ্দমা আর্জিতে এই মর্মে একটি বিবৃতি অন্তর্ভুক্ত থাকিতে হইবে যে, উপরোক্ত ব্যবস্থা অনুযায়ী নোটিশ পাঠানো হইয়াছে।
  
 
  
   
  
নোটিশ ও উহা জারিকরণ 
৯০। এই অধ্যাদেশ বা বিধি বা প্রবিধানের অধীন কোন ব্যক্তি কর্তৃক কোন কিছু করিবার অথবা না করিবার প্রয়োজন হইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাহা প্রতিপালনের সময় নির্দেশপূর্বক নোটিশ জারি করিতে হইবে।
  
 
  
   
  
প্রকাশ্য রেকর্ড 
৯১। এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রস্তুতকৃত এবং সংরক্ষিত যাবতীয় রেকর্ড এবং রেজিস্টার, সাক্ষ্য আইন (Evidence Act, 1872) এ যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে, সেই অর্থে প্রকাশ্য রেকর্ড (Public document) বলিয়া গণ্য হইবে এবং বিপরীত প্রমাণিত না হইলে তাহা বিশুদ্ধ বলিয়া গণ্য হইবে।
  
 
  
   
  
পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সদস্য, ইত্যাদি জনসেবক 
৯২। পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সদস্য, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী এবং পরিষদের কার্য সম্পাদনের জন্য যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্যান্য ব্যক্তি দণ্ড বিধি (Penal Code, 1860) এর ধারা ২১ এ যে অর্থে জনসেবক (Public servant) অভিব্যক্তিটি ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে জনসেবক (Public servant) বলিয়া গণ্য হইবে।
  
 
  
   
  
সরল বিশ্বাসে কৃত কার্য রক্ষণ 
৯৩। এই অধ্যাদেশ, বিধি বা প্রবিধানের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কার্যের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হইলে বা ক্ষতিগ্রস্থ হইবার সম্ভাবনা থাকিলে তজ্জন্য সরকার, পরিষদ বা উহাদের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্য কোন আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে না।
  
 
  
   
  
রহিতকরণ এবং হেফাজত 
৯৪। (১) এই অধ্যাদেশ বলবৎ হইবার সংগে সংগে উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ (১৯৯৮ সনের ২৪ নং আইন), অতঃপর বিলুপ্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, রহিত হইবে।

(২) বিলুপ্ত আইন রহিত হইবার পর-

(ক) এই অধ্যাদেশে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই অধ্যাদেশের অধীনে পরিষদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিলুপ্ত আইন রহিত হইবার অব্যবহিত পূর্বে যে পরিষদ বিদ্যমান ছিল তাহা এই অধ্যাদেশের অধীন গঠিত পরিষদ বলিয়া গণ্য হইবে এবং তদনুসারে উহার কার্যাবলী পরিচালনা করিবে;

(খ) বিলুপ্ত আইনের অধীন প্রণীত সকল বিধি, প্রবিধান ও আদেশ, জারিকৃত বিজ্ঞপ্তি বা নোটিশ বা মঞ্জুরীকৃত সকল লাইসেন্স ও অনুমতি এই অধ্যাদেশের বিধানাবলীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, রহিত ও সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে এবং এই অধ্যাদেশের অধীন প্রণীত, প্রদত্ত, জারিকৃত বা মঞ্জুরীকৃত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;

(গ) পূর্বতন পরিষদের সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সুবিধা, সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, বিনিয়োগ এবং উক্ত সম্পত্তি সম্পর্কীয় উহার যাবতীয় অধিকার বা উহাতে যাবতীয় স্বার্থ উহার উত্তরাধিকারী পরিষদের নিকট হস্তান্তরিত ও ন্যস্ত হইবে;

(ঘ) বিলুপ্ত আইন রহিত হইবার পূর্বে পূর্বতন পরিষদের যে সকল ঋণ, দায় ও দায়িত্ব ছিল এবং উহার দ্বারা বা উহার সাথে যে সকল চুক্তি সম্পাদিত হইয়াছিল তাহা উহার উত্তরাধিকারী পরিষদের ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা বা উহার সাথে সম্পাদিত চুক্তি বলিয়া গণ্য হইবে;

(ঙ) বিলুপ্ত আইন রহিত হইবার পূর্বে পূর্বতন পরিষদ কর্তৃক প্রণীত সকল বাজেট, প্রকল্প ও পরিকল্পনা বা তৎকর্তৃক কৃত মূল্যায়ন ও নির্ধারিত কর, এই অধ্যাদেশের বিধানাবলীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত, এই অধ্যাদেশের অধীন উত্তরাধিকারী পরিষদ কর্তৃক প্রণীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;

(চ) বিলুপ্ত আইন রহিত হইবার পূর্বে পূর্বতন পরিষদের প্রাপ্য সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য অর্থ এই অধ্যাদেশের অধীন উত্তরাধিকারী পরিষদের প্রাপ্য বলিয়া গণ্য হইবে;

(ছ) বিলুপ্ত আইন রহিত হইবার পূর্বে পূর্বতন পরিষদ কর্তৃক আরোপিত সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য দাবি এই অধ্যাদেশের অধীন উত্তরাধিকারী পরিষদ কর্তৃক পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত একই হারে অব্যাহত থাকিবে;

(জ) বিলুপ্ত আইন রহিত হইবার পূর্বে পূর্বতন পরিষদের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী উত্তরাধিকারী পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী হিসাবে বদলী হইবেন এবং তাহারা রহিত হইবার অব্যবহিত পূর্বে যে সকল শর্তে চাকুরিরত ছিলেন, উত্তরাধিকারী পরিষদ কর্তৃক পরিবর্তিত না হইলে সেই শর্তেই তাহারা ইহার অধীন চাকুরিরত থাকিবেন;

(ঝ) বিলুপ্ত আইন রহিত হইবার পূবে পূর্বতন পরিষদ কর্তৃক অথবা ইহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা, অভিযোগ এবং অন্যান্য বৈধ কার্যাবলী উত্তরাধিকারী পরিষদ কর্তৃক অথবা ইহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা, অভিযোগ এবং কার্যাবলী বলিয়া গণ্য হইবে এবং তদানুসারে চলিতে থাকিবে অথবা অন্যবিধ ব্যবস্থা গৃহীত হইবে।
  
 
  
   
  
অধ্যাদেশের ইংরেজী পাঠ 
৯৫। (১) এই অধ্যাদেশ কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই অধ্যাদেশের ইংরেজীতে অনূদিত একটি পাঠ প্রকাশ করিবে, যাহা এই অধ্যাদেশের নির্ভরযোগ্য ইংরেজী পাঠ (Authentic English Text) হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত ইংরেজী পাঠ এবং এই অধ্যাদেশের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে এই অধ্যাদেশ প্রাধান্য পাইবে।
  
 
  
  
 
১ দফা (২৬) স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০৮ (২০০৮ সালের ৫৪ নং অধ্যাদেশ) এর ২ ধারা বলে প্রতিস্থাপিত।

২ `পৌরসভা কর্তৃক মনোনীত একজন কাউন্সিলর` শব্দগুলি `সাময়িক ভাবে মেয়রের দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি` শব্দগুলির পরিবর্তে স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০৮ (২০০৮ সালের ৫৪ নং অধ্যাদেশ) এর ৩ ধারা বলে প্রতিস্থাপিত।

৩ দফা (ঢ) স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০৮ (২০০৮ সালের ৫৪ নং অধ্যাদেশ) এর ৪ ধারা বলে সংযোজিত।

৪ উপ-ধারা (৩) স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০৮ (২০০৮ সালের ৫৪ নং অধ্যাদেশ) এর ৪ ধারা বলে সংযোজিত।

৫ উপ-ধারা (৪) স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০৮ (২০০৮ সালের ৫৪ নং অধ্যাদেশ) এর ৫ ধারা বলে সংযোজিত।

 
 

Copyright © 2010, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs